Saturday, December 30, 2017

আশরাফ আলী থানবীর দৃষ্টিতে গাউসুল আযম শব্দ

‘গাউস’ শব্দের অর্থ হলো সাহায্যকারী। আর ‘আজম’ শব্দের অর্থ হলো বড়। যদি ‘গাউসুল আজম’ শব্দের সংযুক্ত অবস্থায় অর্থ করা হয়, তাহলে অর্থ দাঁড়ায়- (১) বড় সাহায্যকারী (২) বড় পীর আবদুল কাদের জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উপাধী। (ফিরোজুল লুগাত, পৃষ্ঠা- ৯১৮)।

★ আশরাফ আলী থানভী বড় পীর রহমতুল্লাহি আলাইহি সর্বস্তরের ওলী হওয়ার কারনে ওনার সাথে গাউসুল আজম হিসাবে লিখেছে।
(কাসাসুল আউলিয়া- ১ম ঘটনা)

আল্লাহ পাকের মকবুল বান্দাগন আল্লাহ পাকের রংগে রঞ্জিত হয়ে যান

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: আল্লাহ্ তা’আলা বলেন: যে ব্যক্তি আমার অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করছি। আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে। আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমেও আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকে। অবশেষে আমি তাকে ভালবেসে ফেলি। যখন আমি তাকে ভালবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে, তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে আমার কাছে কিছু চাইলে, আমি তাকে তা দেই। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যা করার ইচ্ছা করি, সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি না কেবল মুমিনের আত্মার ব্যাপার ছাড়া। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার মন্দকে অপছন্দ করি। [বুখারী: ৬৫০২]

Monday, December 4, 2017

এবার ১২ই রবিউল আওওয়াল শরীফ উনার দিনে বাধা প্রাপ্তির ঘটনা দিয়ে প্রমাণিত হলো ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ উনার নিসবত (সম্পর্ক) কার সাথে

এবার ১২ই রবিউল আওওয়াল শরীফ উনার দিনে বাধা প্রাপ্তির ঘটনা দিয়ে প্রমাণিত হলো ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ উনার নিসবত (সম্পর্ক) কার সাথে
প্রতি জামানায় ওলী আল্লাহগণ আসবেনই। কিয়ামত অবধি চলবে সে ধারা। এ সমস্ত আউলিয়াকিরামগণকে কেউ চিনবেন, আবার কেউ বা বিরোধীতা করবে। বর্তমান জামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে প্রেরিত সে ধরনের একজন আউলিয়া কিরাম হচ্ছেন ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম।
প্রতি বছর সাইয়্যিদুল অাইয়াদ শরীফ পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনে বাধা না আসলেও এ বছর কিন্তু ছিলো ভিন্ন পরিস্থিতি। এ বছর খ্রিস্টান ধর্মনেতা পোপের সফরকে কেন্দ্র করে ১২ই শরীফ উনার দিন অনুষ্ঠান পালনে বিধি নিষেধ আরোপ করেছিলো প্রশাসন। এ সম্পর্কে বিডিনিউজ২৪ এর খবরে প্রকাশ- “মিলাদুন্নবির শোভাযাত্রা কিংবা জশনে জুলুসের অনুমতি পুলিশ দিয়েছে কি না- জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আউটডোরে সভা-সমাবেশ করার কোনো অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি। পোপ চলে যাওয়ার পর কেউ সভা-সমাবেশ করতে চাইলে করতে পারবেন।”

Saturday, November 18, 2017

বর্তমান কঠিন সংকটময় দুর্দিনে কাফির-মুশরিকদের অবর্ননীয় নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে মুসলমান উনাদের করনীয় কি?


মুসলমানদের কোথায় একত্রিত হতে হবে ? 
====== 
১) শত্রু চিনতে হবে:
কাফিরদের নানান কায়দায় চক্রান্ত থেকে বাঁচতে মুসলমানদের প্রথমে শত্রু চিনতে হবে। আর এজন্য শত্রু সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে হলে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ ভালোভাবে পাঠ করতে হবে এবং সেখান থেকে দৃঢ় আক্বীদা পোষণ করতে হবে কাফির-মুশরিকরা হচ্ছে মুসলমানদের সবেচেয়ে বড় শত্রু।আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা মানুষের মধ্যে তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদী ও মুশরিকদেরকে অর্থাৎ সমস্ত বিধর্মীদেরকে। 

Monday, November 6, 2017

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে- বাতিল ফিরক্বার উত্থাপিত মিথ্যাচারিতার দলীল ভিত্তিক খণ্ডনমূলক জবাব (২)



বাতিল কর্তৃক হক্বের বিরোধিতা ও মিথ্যাচারিতা পূর্বেও ছিল কিনা? থেকে থাকলে কেন এবং কারা করেছে?
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মূলত, হক্ব-নাহক্বের এ দ্বন্দ্ব, অর্থাৎ নাহক্ব কর্তৃক হক্বের বিরোধিতা ও মিথ্যাচারিতা নতুন কোনো বিষয় নয়, বরং হক্ব-নাহক্ব-এর এ দ্বন্দ্ব প্রথম নবী ও রসূল আবুল বাশার হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সময় থেকেই চলে আসছে। দাজ্জালে কাযযাবদের অগ্রণী মালঊন, গোমরাহ ও চির জাহান্নামী ইবলীসই এ বিরোধিতার প্রবর্তক। নাউযুবিল্লাহ!
আমরা দেখতে পাই আবুল বাশার হযরত ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিসহ প্রায় এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার সম্মানিত নবী ও রসূল আলাইহিমুছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাদের প্রত্যেকেরই বিরোধিতা করেছে ওই ইবলীস শয়তানের অনুসারী ও গোলাম দাজ্জালে কাযযাবরা। শুধু তাই নয়; তারা প্রায় সত্তর হাজার হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে শহীদ করেছে। নাঊযুবিল্লাহ!
আর আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি বিরোধিতা ও মিথ্যাচারিতার মাত্রা যে কোন্ পর্যায়ের ছিল তা ভাষায় বর্ণনা করার মতো নয়। বস্তুতঃ সেই বিরোধিতার নযীর ইতিহাসে দ্বিতীয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। উনাকে বলা হয়েছে যাদুকর, জিনে ধরা, পাগল, ধর্মত্যাগী ইত্যাদি। নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ! নাঊযুবিল্লাহ!
ঠিক একইভাবে বিরোধিতার এ ধারাবাহিকতা বজায় ছিল হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরে দুনিয়াতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বোত্তম মানুষ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতিও। বাতিল, গোমরাহ, দাজ্জালে কাযযাব, খারিজী ও রাফিযীরা উনাদেরকে আখ্যায়িত করেছে ক্ষমতালোভী, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ধ্বংস সাধনকারী, মুরতাদ, কাফির ইত্যাদি কুখ্যাতিতে। নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক! নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক! নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক!
শুধু যে মিথ্যা রচনা, অপবাদ আর অশালীন ভাষায় কুৎসা রটনা করেছে তাই নয়। তারা শহীদ করেছে, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দ্বিতীয় খলীফা আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে, তৃতীয় খলীফা আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে, চতুর্থ খলীফা আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে, আমীরুল মু’মিনীন বেহেস্তের যুবক উনাদের সাইয়্যিদ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কলিজা মুবারক উনার টুকরা মুবারক, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নয়নের মণি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং ইমামুল মুসলিমীন হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
বাতিল, গোমরাহ দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতা এখানেই থেমে থাকেনি। তাদের বিরোধিতার এ ধারাবাহিকতা প্রলম্বিত হয়েছিল তাবিয়ীন, তাবে-তাবিয়ীন, ইমাম-মুজতাহিদ ও হক্কানী রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের প্রতিও। এরই ধারাবাহিকতায় তারা বিরোধিতা করেছে জগতখ্যাত আলিমে দ্বীন, সর্বশ্রেষ্ঠ ওলীয়ে কামিল, হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার, তারা উনার লিখিত মহামূল্যবান কিতাব পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! তারা বিরোধিতা করেছে গাউছুল আ’যম, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! বিরোধিতা করেছে সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশ্তী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! বিরোধিতা করেছে ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! বিরোধিতা করেছে আমীরুল মু’মিনীন হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! বিরোধিতা করেছে শায়েখ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! বিরোধিতা করেছে হযরত শাহ্ ওয়ালীউল্লাহ্ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাউযুবিল্লাহ! এবং বিরোধিতা করেছে গত শতকের মুজাদ্দিদ হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার। নাউযুবিল্লাহ! 
আর বিশেষভাবে যিনি বিরোধিতার শিকার, তিনি হলেন আমাদেরই সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ইমামুল মুজতাহিদীন, ইমামুল আইম্মাহ, বাহ্রুল উলুম, হাকিমুল হাদীছ, ইমামে আ’যম ইমাম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। উনার সম্মানিত শান-মান প্রসঙ্গে কিতাবে উল্লেখ আছে যে, “হযরত ইমাম ছুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমরা ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট এরূপ অবস্থায় আসতাম, যেরূপ চুড়–ই পাখি বাজ পাখির নিকট অবস্থান করে এবং নিশ্চয়ই ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন আলিম উনাদের মাথার তাজ মুবারক।” সুবহানাল্লাহ!
আল্লামা ইবনে খাল্লেক্বান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তারিখে খতীব বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনি কি ইমামে আ’যম হযরত ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখেছিলেন? তদুত্তরে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, এরূপ একজন ব্যক্তি উনাকে দেখেছি যে, যদি তিনি এই স্তম্ভকে স্বর্ণের স্তম্ভরূপে প্রমাণ করতে চাইতেন, তবে যুক্তির মাধ্যমে তার প্রমাণ পেশ করতে পারতেন।” সুবহানাল্লাহ!
হযরত ছুফিয়ান ইবনে উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি ফিক্বহ তত্ত্ব সম্পর্কে জানতে ইচ্ছা করে, তার জন্য কুফায় গমন করা ও হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ উনাদের ছোহবত মুবারক লাভ করা আবশ্যক।” সুবহানাল্লাহ! (চলবে ইনশাআল্লাহ)

Thursday, November 2, 2017

সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে- বাতিল ফিরক্বার উত্থাপিত মিথ্যাচারিতার দলীলভিত্তিক খণ্ডনমূলক জবাব (১)



বাতিল কর্তৃক হক্বের বিরোধিতা ও মিথ্যাচারিতা পূর্বেও ছিল কিনা? থেকে থাকলে কেন এবং কারা করেছে?
মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীন তিনি এ দুনিয়াকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত ক্বায়িম রাখবেন হক্বানী আলিম তথা আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাধ্যমে। 
তাফসীরে উল্লেখ করা হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি সব রূহ বা আত্মা উনাদেরকে সৃষ্টি করার পর একত্রিত করে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি আপনাদের রব নই?” জবাবে রূহ্সমূহ উনারা বললেন, “হ্যাঁ, আপনি আমাদের রব।” তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি রূহ্সমূহ উনাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে রূহ্ সম্প্রদায়! আজ থেকে অনেকদিন পর আপনারা দুনিয়ায় যাবেন, দুনিয়ায় গিয়ে এ প্রতিজ্ঞার কথা ভুলবেন না।” একথা শুনে রূহ্ সম্প্রদায় বললেন, “হে মহান আল্লাহ পাক! আমরা তো অনেক বছর পর দুনিয়াতে যাব, আর তখন আমাদের এ ওয়াদার কথা মনে নাও থাকতে পারে।” জবাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন বললেন, “আপনারা চিন্তা করবেন না, মূলতঃ আপনাদেরকে এ ওয়াদার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্যেই আমি প্রতি যুগে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করবো। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে যখন পাঠানো শেষ হয়ে যাবে, তখন নায়িবে রসূল উনাদের তথা হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পাঠাতে থাকবো।” সুবহানাল্লাহ!

Wednesday, October 25, 2017

" ইমামুস সিদ্দিকিন " লক্বব

সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দিকে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে হাবিবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সিদ্দীক উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। এই কারণে উনাকে বলা হয় ইমামুস সিদ্দিকীন। অথচ  সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম নিজের নামের সাথে এই উপাধি ব্যবহার করেন।

সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালামদাবী স্বয়ং আল্লাহ পাক ও হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই পীরালির দায়িত্ব দিয়েছে।

এটা সত্য । কিন্তু ও তবে ব্যপারটি ও বিদ্যমান । তিনি আল্লাহ পাক ও তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে খিলাফত প্রাপ্ত এবং উসীলা উনার পীর সাহেব তাজুল মুফাস্‌সিররীন, রঈসুল মুহাদ্দিছীন, কুতুবুল আলম, মুফতিউল আ’যম হযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ নানুপূরী (যাত্রাবাড়ির হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা) রহ্‌মতুল্লাহি আলাইহি।

রাজারবাগ দরবার শরীফ সম্পর্কে যারা অপপ্রচার তিনি ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন নাউযুবিল্লাহ

* সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ব্যপারে অভিযগ রয়েছে, তিনি উনার ভাইদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন এবং এই নিয়ে মামলাও বিচারাধিন।নাউযুবিল্লাহ 
 অথচ উনার ভাইয়েরা উনাকে পৈতৃক সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য বহু চেষ্টা করছে ।  মূলতঃ উনার ভাই ও এসব অপপ্রচারের শামীল । তারা দলিল দিতে পারবে না তাই আমি দলিল দিচ্ছি । 
* ১৯৪৮ সালে সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পিতা মরহুম সাইয়্যিদ মুহম্মদ মোখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম , উনার মাতার নামে ৫ আউটার সার্কুলার রোডস্থ হোল্ডিংয়ে ৪ বিঘা ১৪ আনা ৪ ছটাক জমি খরিদ করেন। 
* পরবর্তীতে সুখে শান্তিতে বসবাসরত অবস্থায় ১৯৮০ সালে ১.০৩ একর সম্পত্তিতে উনার মাতা নিজ নামে কিয়দাংশ রেখে অবশিষ্ট সম্পত্তি উনাদের ৫ পুত্র এবং ৪ কন্যার নামসহ উনাদের পিতার নামে দানপত্র করে নামজারী করে দেন। কিন্তু ১৯৯০ সালে  সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মেঝ ভাই হাফিজুর রহমান বিদেশ থেকে এসে পারিবারিক সকল সম্পত্তি উন্নয়নের জন্য সে  সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালামসহ মোট ৫ ভাই এবং ৪ বোনকে নিয়ে ১৯৯১ সালে জেড আর এস্টেট প্রাঃ লিঃ কোম্পানী গঠন করে। 

রাজারবাগ দরবার শরীফ সম্পর্কে যারা অপপ্রচার' তাসাউফ শাস্ত্রের সর্বোচ্ছ অধিকারী'

*আত্নশুদ্ধি অর্জনের জন্য যে সাধনা করা হয়, তাকে বলা হয় তাসাউফ। রাজারবাগি পীর সাহেব ক্বিবলা আলাইহিস সালাম দাবি তিনি এই তাসাউফ শাস্ত্রের সর্বোচ্ছ অধিকারী ।
এখানে যদি প্রশ্ন করা হয় এ কথা কি রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম  তিনি নিজে বলেছেন ?  দুইটা উত্তর দিবে-  
১ ইন্টারনেট থেকে পেয়েছি । 
২ মুরিদরা বলেছে ।
তো এখানেও মিথ্যার আশ্রয় নিল । 
* বাতিল ফিরকাদের দাবি,  সাইয়্যিদুনা হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি গাউসুল আযম বড় পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকেও অনেক বড় ধরনের পীর।

রাজারবাগ দরবার শরীফ সম্পর্কে অপপ্রচার কায়্যুমুয যমান

*তার দাবী, সে কায়্যুমুয যমান তথা যমানার ধারক বাহক।
সত্য বলেছে । তিনি কায়্যুমুয যামান । একজন মুমিন ব্যক্তি কখন কায়্যুমুয যামান হয় ? যখন ঐ মুমিন ব্যক্তি নফল ইবাদত করতে করতে এমন এক পর্যায় যান যেখানে নৈকট্য রয়েছে ।
হাদিসে উল্লেখ আছে “ বান্দা নফল ইবাদত করতে করতে আমার এতটুকু নৈকট্য হাসীল করে যে আমি তার চোখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে দেখে আমি তার পা হয়ে যাই যা দিয়ে সে চলে আমি তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে আমি তার মুখ হয়ে যাই যা দিয়ে সে বলে আমি তার কান হয়ে যাই যা দিয়ে সে শোনে । “
এখানে লক্ষ্যণীয় যে উক্ত মুমিন ব্যক্তি আল্লাহ হয়ে যান । কিন্তু হাকিক্কত নন । উপমাটা এরুপ যে একটি রশি দুনিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত । তাকে একটি গিট । এখানে হাকিক্কত হলো মূল রশি গিট হলো মুমিন বান্দাটি ।
তো স্বাভাবিক ভাবেই তিনি কায়্যুমুয যামান । তাছাড়াও তিনি সম্মানিত ১২ ইমামদের একজন । এ বিষয়ে পরে বলছি । আশা করা যায় বিষয়টি বুজতে পেরেছেন ।
*সূর্য এবং চন্দ্র নাকি উনার অনুমতি ব্যতিত উদিত হয় না বা অস্ত যায় না।
এই বক্তব্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা । উনি কখন এ কথা  বলেছেন ?
উত্তর একটাই না তিনি বলেন নি মূলত কায়্যুমুয যামান লকবের সূত্র ধরেই তারা এ কথা নিজ থেকে বলছে ।
তো এখানে কেন বানিয়ে বানিয়ে কথাটা বলল ?
“যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে প্রমাণ পেশ করো ”
কারো সম্পর্কে তার অনুপস্থিতিতে বানিয়ে কথা বলা কি গীবতের মত বড় গূনাহ নয় !


Friday, September 29, 2017

রাজারবাগ শরীফ থেকে প্রকাশ্যে বাহাছের চ্যালেঞ্জ

হক্বের বিরোধীতা সৃষ্টির শুরু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। আর এটা হচ্ছে একটা স্বাভাবিক নিয়ম। নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রত্যেকেরই বিরোধীতা হয়েছিল। স্বয়ং আখেরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও বিরোধীতা হয়েছে। পরবর্তীতে হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের, ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাহি উনাদের ও বিরোধীতা হয়েছিলো। এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে কিয়ামত অবধি।
একই ধারাবাহিকতায় খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ও বিরোধীতায় লিপ্ত রয়েছে কতিপয় ধর্মব্যবসায়ী, মুনাফিক, গোমরাহ, কাফির-মুশরিকদের উচ্ছিষ্ট ভোগী।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম যমানার লক্ষস্থল ওলী আল্লাহ। সে কারনেই উনি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ ইজমা এবং ক্বিয়াস এর উপর পরিপূর্ন প্রতিষ্ঠিত।

Sunday, September 24, 2017

কাফিরদের প্রতি বদদোয়া


আয় মহান আল্লাহ পাক! আপনার প্রতি কারো কোন হক্ব নেই। তারপরেও আপনি নিজেই বলেন, আপনার হক্ব হচ্ছে মুমিনদেরকে সাহায্য করা। এখন দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান আমরা সকলেই আপনার গায়েবী মদদ, আপনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গায়েবী ইহসানের দিকে রুজু হয়ে রয়েছি। আমাদের কোন ব্যবস্থা নেই আয় মহান আল্লাহ পাক! মুসলমানদের কোন ব্যবস্থা নেই, মুসলমানদেরকে কঠিন কষ্ট দেয়া হচ্ছে, অত্যাচার করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে, বরদাশতের বাইরে যুলুম করা হচ্ছে আয় মহান আল্লাহ পাক! হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি ক্বাবা শরীফ উনাকে আপনার নিকট সোপর্দ করেছিলেন আপনি মালিক হওয়ার পরেও অতঃপর আপনি গ্রহণ করেছিলেন এবং হিফাযতও করেছিলেন। আয় মহান আল্লাহ পাক! এখনতো দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান কঠিন অবস্থার সম্মুখীন আপনাকে মানার কারণে, আপনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানার কারণে এরা যুলুম করে যাচ্ছে। আয় বারে ইলাহী!

Thursday, September 14, 2017

রোহিঙ্গা সহ সারা পৃথিবীব্যাপী অকাতরে মুসলমান শহীদ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার অবস্থান

ইদানিং রোহিঙ্গা ইস্যুকে কেন্দ্র করে কিছু বিরোধী মহল বলতে চায় যে, সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ থেকে রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে কি করা হচ্ছে…?
এর জবাবে বলতে হয়, ‘পেঁচা কখনো সূর্য দেখতে পায়না, সেজন্য কি সূর্য উদিত হয়না? সূর্য ঠিকই উদিত হয় কিন্তু পেঁচা সেটা দেখার যোগ্যতাই রাখেনা।
উল্লেখিত মূর্খলোকদের অবস্থাটা হচ্ছে, সেই পেঁচা আর কুয়োর ব্যাঙের মতো। তারা চোখে কাঠের চশমা পড়ে থাকে তাই সামনে সংঘঠিত বিষয় সম্পর্কে তারা অবগত নয়। মূলতঃ এদের কাছে রোহিঙ্গা নির্যাতন প্রকৃত ইস্যু নয় বরং প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে, বিভিন্ন সুতানাতায় সত্যটাকে লুকাননো এবং সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার বিররোধিতা করা। বিরোধী মহলের নানান মিথ্যা অপবাদ-অপপ্রচার করা সত্ত্বেও তার শরীয়তসম্মত জবাব দিয়ে ‘সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ সিলসিলা’ দুর্বার গতিতে দিক-বেদিক ছড়িয়ে পড়ছেন, হক্ব তালাশী মুসলমান সেটা অত্যন্ত তা’যীম-সম্মানের সহিত গ্রহণ করছেন। আজ যার উছীলায় প্রত্যেকেই নিজেকে হাক্বীক্বী মু’মিন-মুত্তাক্বী ও আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হওয়ার কোশশে নিয়োজিত হচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ্, যার কারণে উনারা সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনাকে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ হক্ব দরবার শরীফ হিসেবে মূল্যয়ন করছেন।

Sunday, August 27, 2017

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১১ (১০). হিদায়েতের কার্যক্রম বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক:


(ক). খানকা শরীফ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা:
(ক-১). পবিত্র ইলমে তাছাউফ চর্চার জন্য পবিত্র দরবার শরীফ উনার মাঝে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘খানকা শরীফ’।
(ক-২). পবিত্র দরবার শরীফ উনার মাঝে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। রয়েছে বালক শাখা, বালিকা শাখা এবং হিফজখানা।
(ক-৩). বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মসজিদ, মাদরাসা, খানকা শরীফ, গবেষণাগার, ঈদগাহ, কবরস্থান প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা। ইত্যাদি
(খ). মাহফিল:
(খ-১). অনন্তকালব্যাপী পবিত্র সায়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল জারি এবং উনার কার্যক্রম।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১০ (৯). আযীমুশ্ শান মুবারক দফতর শরীফ- হিদায়েত বিস্তারের এক অনন্য দিক:



পূর্ববর্তী হযরত আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের হিদায়েতের কার্যক্রম বিস্তৃত ছিল মূলত খানকা শরীফ ভিত্তিক বা উনাদের তালিমগাহ নির্ভর। পবিত্র ইলমে তাসাউফ উনার কিতাবসমূহ থেকে যা বোঝা যায়, উনারা পবিত্র ইলমে তাসাউফ উনার শিক্ষার উপরই বেশি প্রাধান্য দিতেন। এর যথেষ্ট কারণও আছে। মুসলিম প্রাধান্যযুক্ত অঞ্চলসমূহে পরিপূর্ণ খিলাফত ব্যবস্থা না থাকলেও শাসকগণ পবিত্র শরীয়ত উনার অনুশাসনসমূহ জানতেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতেন। পবিত্র যাকাত ব্যবস্থা, মসজিদ-মাদরাসার সম্প্রসারণ, উশর আদায়, আলিম-উলামাগণ উনাদের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তালিম-তালকীনের ব্যবস্থাও মুসলিম সুলতান ও বাদশাহর পক্ষ থেকেই হতো।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৯ (৮). রাজারবাগ শরীফ সিলসিলার আক্বীদা মূলত আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার বিশুদ্ধ আক্বীদা:


আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদা বিস্তারিত ব্যাখ্যা মূলত করেছেন- হযরত ইমাম আবুল মনসুর মাতুরিদি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং হযরত আবুল হাছান আশয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। অতঃপর পরবর্তীতে অন্যান্যরা। তবে হযরত ইমাম আশয়ারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আক্বায়িদ হচ্ছে- মালেকী, শাফেয়ী ও হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী। আর হযরত ইমাম মাতুরিদি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী ছিলেন এবং হানাফী মাযহাব উনার আক্বীদাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৮ (৭). হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কার্যক্রমের ব্যাপ্তি



একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনার কার্যক্রমের ব্যাপ্তি কেবল জানেন স্বয়ং যিনি মুজাদ্দিদ তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি। 

একজন মহান মুজাদ্দিদ উনার সম্মানিত হায়াত মুবারকে যা তাজদীদ মুবারক করেন তা কেবল উনার সময়কালে সীমাবদ্ধ থাকে না, তা কাল পেরিয়ে চলতে থাকে দীর্ঘ সময়ব্যাপী। তবে এটা সহজে এভাবে বলা যেতে পারে- যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি ১০০ বছর পরপর একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ উনাকে পাঠান, তার অর্থ কমপক্ষে ১০০ বছর ধরে ওই মহান মুজাদ্দিদ উনার তাজদীদ মুবারকের এক ধরনের প্রচ্ছন্ন ব্যাপকতা থাকে। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ সেখানে বিভ্রান্তি প্রবেশ করায়। আবার বলা হয়- ৫০০ বছর এবং হাজার বছর পরপর যিনি মুজাদ্দিদ হিসেবে প্রকাশিত হন, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সাথে নিসবত-কুরবত উনার দিক থেকে অনেক বেশি দৃঢ় হয়ে থাকেন। ফলে উনাদের কার্যক্রম আরো ব্যাপক হয়ে থাকে।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৭ (৬). সুন্নতী মাসজিদ প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে দুই মহান ওলীআল্লাহ উনাদের প্রতি মহান নির্দেশ মুবারক:


পাঠক, আলোচনার সুবিধার্থে আমাদের জানা প্রয়োজন- রাজারবাগ শরীফ উনার মহান মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম, যিনি ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলাইহিস সালাম। উনার সম্মানিত পিতা, মহান আল্লাহ পাক উনার মহান ওলী, আওলাদে রসূল, বিশিষ্ট বুযুর্গ, কুতুবুজ্জামান হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনাকে সম্বোধন করা হয় ‘হযরত দাদা হুযূর কিবলা আলাইহিস সালাম’ হিসেবে। আর উনার সম্মানিত শায়েখ শাহ ছুফী হযরত মাওলানা মুহম্মদ ওয়াজিউল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনি অবস্থান করতেন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে। উনি যাত্রাবাড়ীর পীর ছাহেব ক্বিবলা (শায়েখ ক্বিবলা) হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। সম্মানিত শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন যাত্রাবাড়ী থেকে রাজারবাগ শরীফ এসে দেখা করেন ১৫ শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, আওলাদে রসূল, ইমামুল উমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা এবং বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সাথে।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৬ (৫). পবিত্র সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা উনাদের মূল বুনিয়াদী অবকাঠামো ও তার পূর্ণ বিবরণী:


আলহামদুলিল্লাহ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মুবারক নির্দেশ এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিক-নির্দেশনায় রাজারবাগ শরীফে সুন্নতী জামে মসজিদ উনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্লান্ত ও অবর্ণনীয় ত্যাগ ও পরিশ্রমে সর্বপ্রকার সুন্নতী নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়। যথাক্রমে যশোর ও ফরিদপুর এবং ঢাকা রূপগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে খেজুর গাছ, খেজুরের পাতা, কা- ও ছাল। আমাদের দেশের অধিকাংশ খেজুর গাছই রস সংগৃহীত কাটা গাছ। আর ওই কাটা গাছ দিয়ে স্তম্ভ, কাঠ, রুয়া ইত্যাদি তৈরি করা সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ ভালো গাছের দরকার। তাই অনেক খোঁজাখুঁজি ও ব্যয়বহুল ব্যবস্থায় দূর-দুরান্ত থেকে ট্রাকযোগে ও নৌপথে সমস্ত সুন্নতী সামগ্রী সংগ্রহ করে পবিত্র রাজারবাগ শরীফ-এ আনা হয়। চাল বাঁধাইয়ের জন্যে বেঁত আনতে হয় সিলেট থেকে। দেয়াল নির্মাণের জন্য লালমাটি সংগ্রহ করা হয় ঢাকা ক্বদমতলা রাজারবাগ থেকে। পাথর আনা হয় নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৫ (৪). পবিত্র সুন্নতী মসজিদ উনার কথা-(খ):


এই পবিত্র সুন্নতী মসজিদ উনার মিল রয়েছে সেই পবিত্র মদীনা শরীফে হিজরত করে এসে প্রতিষ্ঠিত ‘মসজিদে নববী শরীফ’ উনার সাথে। সে আলোচনা আজ শোনা যাক।
ঢাকার কেন্দ্রস্থল রাজারবাগ এলাকায় মহান আল্লাহ পাক উনার মহান ওলী, আওলাদে রসূল, বিশিষ্ট বুযুর্গ, কুতুবুজ্জামান হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার আবাস; যিনি ১৫ শতকের মহাসম্মানিত মুজাদ্দিদ, ইমামুল উমাম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত পিতা।
আওলাদে রসূল, বিশিষ্ট বুযুর্গ, কুতুবুজ্জামান হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার পুত্র সন্তানগণের মধ্যে যিনি তৃতীয়, তিনি সবার চেয়ে একেবারেই ব্যতিক্রম। উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক যখন কম, তখন থেকেই লক্ষ্য করা গেছে যে- তিনি পবিত্র সুন্নত পালনে অবিচল। উনার জীবন মুবারকের বিভিন্ন সময়ে সাক্ষাৎ হয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে। এছাড়াও অনেক হযরত ছাহাবা আজমাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, সম্মানিত মাযহাব উনাদের ইমাম, সম্মানিত তরীক্বা উনাদের ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা দেখা করে উনাকে বভিন্ন বিষয়ে সুসংবাদ প্রদান করতেন।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৪ এক সুন্নতী মসজিদ উনার কথা:



রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি তুলে ধরতে হলে পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ উনার কথা বলতেই হবে। এছাড়া সমস্ত বর্ণনা অপূর্ণ রয়ে যাবে। মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার ঘর। খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে- মুসলমান মাত্রই কোনো না কোনো মসজিদ তৈরিতে সাহায্য করেন বা দান করে থাকেন। শহরে থাকলে এলাকার মসজিদে, গ্রামে থাকলে গ্রামের মসজিদে আবার অনেকে শহরে থেকেও নিজের গ্রামের মসজিদের জন্য দান করে থাকেন। পাশ্চাত্যে যেমন- আমেরিকা, ব্রিটেন, ইটালী, ফ্রান্স এসব দেশে যখন কোনো মুসলিম দেশ যেমন- বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা কোনো আফ্রিকার মুসলিম দেশ থেকে মুসলমানগণ যান; তারা সেদেশে গিয়ে অনেক মসজিদ-মাদরাসা তৈরি করেছেন তার বহু নজির রয়েছে। অনেক বেনামাযী লোকও কেবল মসজিদ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নামাযী হয়ে গেছেন। এর কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত। অর্থাৎ খালিছ নিয়তে কেউ যদি মহান আল্লাহ পাক উনার ঘরের খিদমতের আঞ্জাম দেয়, তাহলে এক সময় তার আল্লাহওয়ালা হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়ে যায়।

Friday, July 28, 2017

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩

(৩). ঢাকাস্থ ‘রাজারবাগ শরীফ’ থেকে কার্যক্রম শুরু:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ববর্তী সময়ে যে সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা এসেছিলেন, উনারা একটি নির্দিষ্ট কওমের হিদায়েতের জন্য এসেছিলেন। একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এসেছেন পুরো কায়িনাতের জন্য। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন ‘খাতামুন নাবিইয়ীন’ অর্থাৎ উনার পর আর কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা আসবেন না; কিন্তু উনার উম্মতের মধ্য থেকে আসবেন সম্মানিত “মুজাদ্দিদ”। মুজাদ্দিদগণ কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় অবস্থান করলেও উনাদের হিদায়েতের কার্যপরিধি থাকে পৃথিবীব্যাপী।

Thursday, July 27, 2017

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-২: মুবারক পূর্বপূরুষ উনাদের পরিচিতি:


আমাদের এ অঞ্চলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচারের জন্য কোনো হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা আসেননি। এসেছেন হযরত ওরাছাতুল আম্বিয়াগণ অর্থাৎ ওলীআল্লাহগণ উনারা। উনারাই এ অঞ্চল যথা: বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার করেছেন, পথহারা মানুষদেরকে ঈমান দান করেছেন। এমনি এক মহান ওলীআল্লাহ ছিলেন খাজা গরীবে নাওয়াজ হযরত মুঈনুদ্দীন চিশতি রহমতুল্লাহি আলাইহি; যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাইবিয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে ভাতবর্ষের আজমীর শরীফে হেদায়েতের বার্তা নিয়ে আগমন করেন। তিনি সমরখন্দ, লাহোর, মুলতান হয়ে দিল্লী পৌঁছেন। পরবর্তীতে দিল্লী থেকে আজমীর শরীফ পৌঁছে পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রচার শুরু করেন।

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-১

(১)রাজারবাগ শরীফ উনার সিলসিলা:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেন- “আমার উম্মত আমার শিক্ষাকে ৭৩টি দলে বিভক্ত করবে, তবে তার মাঝে একটি দল হবে হক।” সেই সঠিক আক্বীদাবিশিষ্ট দলকে পরবর্তীতে বলা হয়েছে ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা গেলো অনেকেই নিজেদের সেই দলের সদস্য দাবি করছে কিন্তু তাদের আক্বঈদ, আমল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত থেকে ভিন্ন, যেমন ওহাবী ও সলাফী সম্প্রদায়। চার মাযহাবের অনুসারীগণই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারী। তারপরেও একই মাযহাবের অনুসারীগণের মধ্যে আবার ইলমে তাসাউফ, ইলমে আখলাক বা ইলমে বাতেন হাছিলের জন্য বিভিন্ন ধারা, তরীক্বা বা সিলসিলা পাওয়া যায়। ‘সিলসিলা’ একটি আরবী শব্দ; যার অর্থ- চেইন বা সংযোগের ধারাবাহিকতা। এটা আধ্যাত্মিক বংশতালিকাও বটে, যেখানে একজন কামিল মুর্শিদ বা শায়েখ উনার উত্তরপুরুষদের মধ্যে খিলাফতের ভার ন্যাস্ত করে যান। ‘সিলসিলা’ হচ্ছে কামিল মুর্শিদ বা শায়েখগণের একটি পর্যায়ক্রমিক ধারা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- গাউসুল আ’যম হযরত বড়পীর সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা গারীব নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা আহলে সুন্নাত জামাতের আক্বীদাভুক্ত হবার পরেও মাযহাবের দিক থেকে এবং তাসাউফ শিক্ষার সিলসিলার দিক থেকে ভিন্ন। আর সে কারণে অনেক সময় তাসাউফ শিক্ষার পর্যায়ক্রমিক ধারাই ‘সিলসিলা’ হিসেবে মশহুর হয়ে থাকে।