Sunday, August 27, 2017

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৬ (৫). পবিত্র সুন্নতী মসজিদ ও মাদরাসা উনাদের মূল বুনিয়াদী অবকাঠামো ও তার পূর্ণ বিবরণী:


আলহামদুলিল্লাহ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মুবারক নির্দেশ এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিক-নির্দেশনায় রাজারবাগ শরীফে সুন্নতী জামে মসজিদ উনার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অক্লান্ত ও অবর্ণনীয় ত্যাগ ও পরিশ্রমে সর্বপ্রকার সুন্নতী নির্মাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়। যথাক্রমে যশোর ও ফরিদপুর এবং ঢাকা রূপগঞ্জের কালীগঞ্জ থেকে খেজুর গাছ, খেজুরের পাতা, কা- ও ছাল। আমাদের দেশের অধিকাংশ খেজুর গাছই রস সংগৃহীত কাটা গাছ। আর ওই কাটা গাছ দিয়ে স্তম্ভ, কাঠ, রুয়া ইত্যাদি তৈরি করা সম্ভব নয়। পূর্ণাঙ্গ ভালো গাছের দরকার। তাই অনেক খোঁজাখুঁজি ও ব্যয়বহুল ব্যবস্থায় দূর-দুরান্ত থেকে ট্রাকযোগে ও নৌপথে সমস্ত সুন্নতী সামগ্রী সংগ্রহ করে পবিত্র রাজারবাগ শরীফ-এ আনা হয়। চাল বাঁধাইয়ের জন্যে বেঁত আনতে হয় সিলেট থেকে। দেয়াল নির্মাণের জন্য লালমাটি সংগ্রহ করা হয় ঢাকা ক্বদমতলা রাজারবাগ থেকে। পাথর আনা হয় নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে।

বিজ্ঞ বিজ্ঞ মিস্ত্রী যোগাড় করে ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ-১৪০৬ হিজরী সনে (২৮ সাদিস-১৩৫৩ শামসী সন, ১৯৮৬ ঈসায়ী সন) পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদ তৈরির কাজ শুরু হয়। সুন্নতী জামে মসজিদ উনার বারান্দা, হুজরা শরীফ ও সুফ্ফাখানাসহ দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। মূল মসজিদ উনার দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট এবং প্রস্থ ২০ ফুট। মসজিদের চাল বা ছাদ ছিল ৯ ইঞ্চি পুরু খেজুর পাতার ছাউনি। চালের ফ্রেম ছিল ২/২ ইঞ্চি রুয়া। আড়া ছিল তাল ও খেজুর গাছের। আর ৬খানা স্তম্ভ/খুঁটি ছিল খেজুর গাছের। দেয়াল নির্মাণে লালমাটির কঙ্কর (ছোট পাথর) বিছিয়ে দেয়া হয়। মসজিদের ভেতরে স্তম্ভে মাটির চেরাগ ব্যবহার করা হয়, যা সংগ্রহ করা হয়েছিল পুরান ঢাকার ঠাটারীবাজার ও টঙ্গি থেকে। উক্ত চেরাগে আলো জ্বালানোর জন্যে পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণে সরিষার তেল ও যয়তুন তেল ব্যবহার করা হয়। সুবহানাল্লাহ! সুন্নতী মসজিদ উনার বিছানা ছিল পবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণে খেজুর পাতার চাটাই দিয়ে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র জায়নামাযও ছিল খেজুর পাতার তৈরি। আর মিম্বর শরীফ তৈরি করা হয়েছিল চট্টগ্রাম, কক্সবাজার থেকে ঝাউগাছ এনে তিন থাক (তাক/সিঁড়ি) বিশিষ্ট সুন্নতী মাপে। পবিত্র সুন্নতী মাপে খেজুর গাছের লাঠি মুবারকও তৈরি করা হয়। গরমকালে তাল পাতার পাখা ব্যবহার করা হতো। সুবহানাল্লাহ! (চলবে)

No comments:

Post a Comment