Friday, February 23, 2018

ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম কি নতুন কেউ ? (২)

গত শতাব্দীর মুযাদ্দিদ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (ফুরফুরাহ) রহমতুল্লাহি উনার প্র্রধান খলিফা ছিলেন উনার দুই সম্মানিত পুত্র হযরত নাজমুস সাআদাত সিদ্দিকী রহমতুল্লাহি এবং হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিক রহমতুল্লাহি । উনাদের থেকে খিলাফত পেয়েছিলেন ঢাকা যাত্রাবাড়ি দরবার শরীফ উনার সম্মাানিত শায়েখ হযরত আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি। হযরত আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি ঐ সময় (৫০ এর দশক থেকে ৯৫ সালে উনার বেছাল শরীফ গ্রহণ) সনামধন্য আলেম ও বুজুর্গ। সমস্ত সিলসিলাহ লোকজন উনার কাছে যান। বর্তমানে যারা ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার বিরোধীতা করেন তারাও সেখানে সোহবতে গিয়ে বসে থাকতো। কওমীগুরু হাফেজ্জী, চর্মনাই, বায়তুল মোকাররমের খতিব উবাইসহ সকালের আনাগোনা ছিলো সেই দরবারে। সেই দরবার শরীফ-উনার মধ্যে ইলমে তাসাউফ অর্জন করতে যাতায়ত করেন ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার শায়েখ আলাইহিস সালাম। উনার দুনিয়াবী বয়স মুবারক তখন যুবক বয়সী। তিনি কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন নাই। কিন্তু সেই অতি সুন্দর যুবক বয়সী ব্যক্তি যখন যাত্রাবাড়ি দরবার শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করতেন, তখন ঐ দরবার শরীফ উনার শায়েখ দাড়িয়ে যেতেন। কখন কখন গেইট থেকে উনাকে এগিয়ে নিয়ে আসতেন। সুবহানাল্লাহ।

বিষয়টি একটু চিন্তা করুন, দরবার শরীফ অবস্থান করছে শত শত আলেম ওলামা। একেক জন ২০-৩০ বছর মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছে, দরস দিয়েছে, তারা সবাই শায়েখের সোহবত ইখতিয়ার করছে, এমন মুহুর্তে একজন যুবক বয়সী সুদর্শন ব্যক্তি দরবার শরীফে প্রবেশ করছেন, আর উনার পীর সাহেব উনারই সম্মানে দাড়িয়ে যাচ্ছেন, উনাকে আদর করে গেট থেকে এগিয়ে নিয়ে আসছেন। বিষয়টা কতটুকু বিস্ময়কর !!
ঐ সময় সব বড় বড় মুফতি মুহাদ্দিসরা ৩০-৪০ বছর সোহবত ইখতিয়ার করে খাস খিলাফত পায়নি, অথচ ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ৪ তরিক্বার খাস খিলাফত লাভ করেন। সুবাহানাল্লাহ।
সবার তখন এক কথা, কে এই সুদর্শন যুবক ? কেন উনাকে উনাকে শায়েখ এত সম্মান দেন ? কেন উনাকে নাম ধরে না ডেকে আদর করে ‘শাহ ছাহেব’ বলে সম্বোধন করেন ? কেন মাত্র দেড় বছরের মধ্যে উনাকে ৪ তরিক্বার খিলাফত মুবারক দেওয়া হলো ? এমনকি অনেক পীর ভাইকে উনার সোহবত ইখতিয়ার করতে বলা হলো ? উনি কে ? তিনি তো কোন মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেননি, তবে উনার এত সম্মান কিভাবে ?
সম্মানিত যাত্রাবাড়ী দরবার শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি এক কথায় জবাব দিয়েছিলেন, “শাহ ছাহেবকে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার দববার শরীফে নিয়ে এসেছেন এবং উনারাই শাহ ছাহেবকে খিলাফত দিয়েছেন এবং উনারাই শাহ ছাহেবকে এত সম্মান ও মানমর্যাদা দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ।
মূলত উনার এত শান মান উনার কারণেই অন্যরা উনাকে হিংসা শুরু করে এবং সেই হিংসা থেকেই বিরোধীতার সূত্রপাত, যা আজ অবধি চলছে।
আপনারা দেখবেন, এখনও প্রায় শোনা যায়- “তিনি তো মাদ্রাসায় পড়েনি”। অথচ মাদ্রাসায় না পড়লেও উনার জ্ঞানের ধারে কাছে কেউ তখনও আসতে এবং কষ্মিনকালেও পারবে না। কারণ যিনি মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের থেকে ইলম অর্জন করেন, উনার সামনে কি অন্য কোন লেখাপড়া টিকতে পারে ?
মূলত যুবক বয়সেই অপরিসীম ইলম ও সুন্নতের আমলের কারণে আজ থেকে ২৮-৩০ বছর আগে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী উপলক্ষে ১৫ দিনব্যপী অনুষ্ঠান হতো, তার শেষ দিন প্রধান অতিথি হতেন ঢাকা রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার সম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম তিনি। শেষ দিন মূল মুনাজাত শরীফ তিনিই পরিচালনা করতেন। সুবহানাল্লাহ। (চলবে)

No comments:

Post a Comment