Monday, February 1, 2016

ওলী-আল্লাহগণের বিরোধিতাকারীদের হুশিয়ারী দিয়ে হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ সাবধান করে দিয়েছেন।


১. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত-"  রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার অলীর সাথে শত্রুতা করে, আমি তার বিরোদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি । যেসব অধিক প্রিয় কাজ সমুহের দ্বারা বান্দা আমার অধিক নৈকট্য লাভ করে সেগুলো হল ফরজ কাজসমুহ। অত:পর আমার বান্দা নফল কাজের মাধ্যমে আমার আরো এত নিকটবর্তী হতে থাকে যতক্ষন না আমি তাকে ভালবাসি , তখন আমি তার শ্রবন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই যা দ্বারা সে শোনে ! তার দর্শন ইন্দ্রীয় হয়ে যাই, যা দ্বারা সে দেখে ! তার হাত হয়ে যাই, যা দ্বারা সে ধরে এবং তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে চলাফেরা করে ! যদি সে আমার কাছে কিছু প্রর্থনা করে, আমি তাকে তাই দেই। যদি সে আমার নিকট আশ্রয় কামনা করে, তাহলে আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি কোনকিছু করার ব্যপারে দিধ্যাবোধ করি না, যতটা না মুমিনের রুহ কবজের (নেয়ার) ব্যপারে করি এজন্য যে সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তাকে অসন্তুষ্ট করতে অপছন্দ করি।

Reference :

  • বুখারী শরিফঃ ৬৫০২
  • মেশকাত শরীফ-১৯৭ পৃষ্ঠা

২. হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা যখন হযরত মূছা আলাইহিস সালাম ও হযরত হারুন আলাইহিস সালামকে ফেরাউনের নিকট পাঠাযন , তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরঁকে বলেন, ফেরাউনের দুনিয়ার সম্মান ও শান শওকত যেন আপনাদেরকে অবাক না করে, খেয়াল রাখুন এইসব জিনিষের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি যাতে না যায়, এইসব কিছু দুনিয়াতে সুখ ও আরাম আয়েশের অলংকার মাত্র, আমি (আল্লাহ) যদি আপনাদেরকে দুনিয়ার আরাম আয়েশ, সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানায় রাখতে ইচ্ছা পোষন করতাম তবে ফেরাউন আপনাদের বালা খানার সৌন্দয্য দেখে নির্বাক হয়ে যেত, কিন্তু আমি আপনাদের  দুজনকে
ইহা থেকে হেফাযতে  রেখেছি। কেননা আমি আমার বন্ধুদের সাথে এই রকমই করি, আগেও আমার ওলিদের বা বন্ধুদের জন্য আমি এই রকম ( আপনারা  যে অবস্থায়) অবস্থা পছন্দ করেছি, আমি (আল্লাহ) তাদেরকে (ওলিদের) দুনিয়ার আরাম আয়েশ, সুখ- শান্তি , ও প্রাচুয্যের বালা খানা থেকে এমনভাবে দূরে রেখেছি রাখাল তার ছাগল গুলোকে বিপদজনক শস্য মাঠ থেকে দূরে রাখে, দয়াময় রাখাল তার উঠ গুলোকে নিরাপদে রাখে, আমার ওলীদের সাথে আমার এই বিনিময় এই কারনে যে আমার কাছে তাদের কোন গুরুত্ব নেই তা নয়, বরং পরকালে তারা যেন আমার কাছ থেকে পরিপূন সম্মান ও অসীম নেয়ামত অর্জন করে নেয়, দুনিয়ার এই অবস্থা, মর্যাদা ও প্রাচুর্য পরকালের তুলনায় কিছু না। দুনিয়াতে মোরাকাবা ও মোশাহেদা বা আমাকে (আল্লাহকে) পাওয়ার ধ্যান ই হল আমার ওলিদের জন্য প্রাচুর্য্য , তাদের পোশাক বা চেনার চিহ্ন হচ্ছে তারা শান্তিকামি ও মাহবুবের ধ্যানে মগ্ন। তাদের চেহেরার উপর আল্লাহর ইবাদতে মশগুলের কারনে সিজদার চিহ্ন পরিলক্ষিত হয়, নিঃসন্দেহে তারাই হচ্ছে আমার সত্যিকারের বন্ধু।
(হে মুমিন গন) যখন তোমরা তাদের সাক্ষাত পাবে , তাদের প্রতি সর্বোচ্চ তাজিমের (সম্মানের) সাথে সাক্ষাত কর, তোমার জিব্বাহ ও অন্তরকে তাদের ক্ষেত্রে সাবধান রাখ। এবং জেনে রাখ ( হে মানব সম্প্রদায়) যে কেও আমার ওলিকে ঘৃনা করল অথবা আমার ওলির সম্মানকে হালকা মনে করল সে যেন আমার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করল !! সে যুদ্ধের জন্য আমার সামনে এগিয়ে আসল, আমি (আল্লাহ) আমার বন্ধুদের সাহায্যের ক্ষেত্রে খুব দ্রুতগামি ! যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল, সে কি মনে করে সে আমার সামনে যুদ্ধের জন্যে দাডাঁতে পারবে ? যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সে কি মনে করে সে আমাকে দুশমনির খাতিরে অক্ষম করে দেবে ?
যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে সে আমার কাছ থেকে পালিয়ে যাবে ?  যে ব্যক্তি আমাকে যুদ্ধের জন্য আহবান করল সেকি মনে করে সে আমাকে পরাজিত করবে? কক্ষনো নয়। আমি আমার বন্ধুদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতে পরিপুর্ন সফলতা দান কারি, তাদেরকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে আমি নিজেই সাহায্যকারী।

Reference :
From : হাফেজ আবু নাঈম আহমদ ইবনে আবদুল্লাহ আল-ইসফাহানী:
Book : “হিলয়াতুল আউলিয়া ওয়া তাবকাতুল আছফিয়াহ”
Volume : ১খন্ড, পৃষ্টা নং- ১১-১২

No comments:

Post a Comment