Monday, February 1, 2016

দেওবন্দী আলেমদের মতে পীর ওলি…

বর্তমান দেওবন্দী গণ আহলে হাদিসের নিউ আপডেট। পীর মাশায়েখ গণ যদি কোনো উপকারে না আসে তা হলে  দেওবন্দ এর সকল আলেম কেন নিজেদের কে (চিশতিয়া ) বুজুর্গ বলে দাবি করেন ? আর হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজেরে মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর হাতে কেন বাইয়াত হল ? 

দেওবন্দী আলেম মালানা রশিদ আহমাদ গাংগুহী এর কিতাব (মাহমুদুস সুলুক) এর -
  • পৃষ্টা নং ৫৯ তে লিখেছে যে ;- একথা খুব ভালো করে জানা প্রয়োজন যে , মুরিদের জন্য একজন কামিল পীরের খুবই দরকার। তিনি তার ইসলাহের জন্য শরীয়াত ও তরিকতের পথের সহায়ক হবেন,ও আল্লাহর নৈকট্ব পাওয়ার পথে উঁচুনিচু,সুবিধা-অসুবিধা,ভালো-মন্দের সম্পর্কে তাকে সতর্ক করবেন। যেমন আল্লাহ বলেন ;- হে ঈমানদারগণ , আল্লাহকে ভয় কর ,ও তাকে পাওয়ার জন্য নির্ভরশীল সহায়ক(অসিলা) তালাশ কর (সুরা মায়েদা আয়াত ৩৫ ) 
নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ ফরমান যে ;- আমার সাহাবাগণ তারকা সমতুল্য ,তোমরা যে কারো অনুসরণ করবে হেদায়াত পেয়ে যাবে।"
এতে প্রমানিত হয় যে হেদায়াত পাওয়ার জন্য কোনো না কোনো আল্লাহ ওয়ালা বুজুর্গের অনুসরণ করা প্রয়োজন কেননা তার অনুসরণ মাধমেই আল্লাহকে পাওয়া যাবে (মাহমুদুস সুলুক ) রশিদ আহমদ গাঙ্গুহীর লেখা পৃষ্টা নং ৫৯। 

  • উক্ত কিতাবের ৬০ নং পৃষ্টায় লিখেছে ;- 
১. ইমাম গাজ্জালি রহমতুল্লাহি আলাইহি এর কিতাব (এহইয়া-উলুমুদ্দীন ) কিতাবে বর্ণিত হাদিস তুলে ধরে লিখেছে যে ;- আল্লাহ তায়ালা উম্মতের হেদায়েত যেমন নবীগনের দিয়ে করিয়ে থাকেন ঠিক তেমন মুরিদ গনের হেদায়াত আপন কামিল বুজুর্গের দিয়ে করিয়ে থাকেন 
২. এই হাদিসের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রশিদ আহমাদ গাংগুহী লিখেছে যে ;- শায়খে কামিল নবীর নায়েব হিসেবে নবুয়াতের খেদমত আনজাম দিয়ে আপন মুরিদ গনকে সত্পথ দেখান এবং তাদেরকে গোমরাহী থেকে সতর্ক করেন , এ হিসেবে তারা মানুষের জন্য আম্বিয়া কেরামের মত নবীর তরিকায় হিদায়েত ও নাজাতের ওসিলা হন

৩. আরো ইমাম গাজ্জালি রহমতুল্লাহি আলাইহি বক্তব্য তুলে ধরে লিখেছে যে ;- পীরের এত সম্মান তার মোটা তাজা সরির ও দৈহিক সক্তি ও পার্থিব সম্পদের কারণে নয় , বরং আল্লাহর মারিফাতের জ্ঞান ও আল্লাহকে পাওয়ার পথের অভিজ্ঞতা ও আখিরাতে নাজাত পাওয়ার যোগ্যতার কারণে। তাই তো দেখা যায় ভালো বংশীয় নয় বরং নিস্য ,গরিব, দরিদ্র , ও ছোট পেশার অনেকেই শায়েখ ও সম্মানী পীর হয়েছেন ও দ্বীনি খিদমত আনজাম দিয়ে মানুষের ইসলাহের জিম্মাদারী পালন করে যাচ্ছেন 

  • আরো দেখুন ;-
"আকাবির কা সুলুক ও এহসান" কিতাবের ২০ নং পৃষ্টায় লিখেছে যে ;- হজরত মালানা ইলিয়াছ  তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর ও জিকির আজকার এর যে মেহনত চালু করেছে এবং তা করতে সকল কে আদেশ করেছে ও আমলি নমুনা পেশ করেছে তাও জেনে এই বেপারে আমার মনস্থির হল যে ;- তাবলীগের নামে পীর মুরিদীর প্রচার করা। ((আকাবির কা সুলুক) সায়েখুল ইসলাম মাওলানা জাকারিয়া এর কিতাব পৃষ্টা ২০
আর আজকের দেওবন্দী গণ কথায় কথায় সেই পীর মুরিদী কে কটাক্ষ করতে পারলেই যেন বেছে যায়


  • "শরীয়াত ক তরিকত কা তালাজুম" কিতাবের ১০ পেজ এ তাবলিগীদের আজিম জাকারিয়া  হজরত জাবের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর একটা হাদিস বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে "গাছের নিচে যে মুমিন সাহাবা গণ মুরিদ হয়েছেন তাদের কেউ জাহান্নামে যাবে না " (  তিরমিজি সরিফ ২ য় খন্ডের ২২৫ নং পৃষ্টা) হে আল্লাহ যারা মুরিদ হউয়ার ভেদ বোঝেনি তাদের কে আমল করার তৌফিক দান করুন ৷ (শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম মালানা জাকারিয়া এর লিখা পৃষ্টা নং ১০-১১) 

এই খানে দেওবিন্দী দের শায়খুল ইসলাম পীর মুরিদী ও একজন পীরের কত ইজ্জাত দান করেছে এ কি দেখে নাই দেওবন্দী রা ?


  • মুরিদ না হলে বেইমান হয়ে মরতে হয় ;- 

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন রাসুল্লুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন "যে বেক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুকরণ থেকে হাত সরিয়ে নিবে কেয়ামতের দিন তার নাজাতের জন্য কোনো দলিল থাকবে না ৷ আর যে বেক্তি মুরিদ হওয়া ছাড়া মরবে তার মিত্তু জাহেলি যুগের বেইমান লোকদের মত হবে ( মুসলিম শরিফ ২ খ ১২৮ প্রিষ্ট)
বর্ণিত হাদিসের ব্যাখ্যায় জাকারিয়া লিখেছে যে ;- রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুকরণ না করলে ক্ষমার কোনো দলিল থাকবে না তার পক্ষে কিয়ামতের দিন , আর ও বলেন মুরিদ না হয়ে মরলে জাহেলিদের মত মৃত্যু হবে ৷যেহেতু নবী পাক দাওয়াত ও তাবলিগ দ্বারা সকলকে মুরিদ করে ঈমানী শিখা দিতেন ৷ তাই তার ও আল্লাহ পাকের অনুকরণে মুরিদ না হলে জাহান্নামী হতে হবে ৷ সুরা ফাতহ এর ১০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সকল সাহাবীকে মুরিদ করার ঘোষনা দিয়েছেন ৷ তাই মুরিদ করা ও মুরিদ হওয়া আল্লাহ ও নবীর তরিকা হিসেবে মর্যাদার স্থান পেয়েছে ৷ আর কোরান ও হাদিস দ্বারা ও তা প্রমানিত ৷ এভাবে মুরিদ না হলে আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধী বলা হয়েছে ও তাদের কে অশিক্ষিত কাফেরদের মত জাহান্নামী বলা হয়েছে ৷ আর মুজতাহিদ ইমামগণ ও মুরিদ হওয়ার বিষয় কঠোর মনোভাব ব্যাক্ত করেছেন ৷ (শরীয়াত ও তরিকত কা তালাজুম-  দেওবিন্দিদের আজিম শায়খুল ইসলাম জাকারিয়ার লেখা পৃষ্টা নং ১১) 

  • হজরত ইমাম হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মতে ইমান হলো নবীর নবীর তরিকায় মুরিদ হওয়া ও নবীর আদেশ নিষেধ পরিপূর্ণ ভাবে পালন করা ৷ মুরিদ হওয়া একটা বিষয় হলে ও ইমান ,ইসলাম , শরীয়তের সকল বিষয় এর ভিতর আছে ৷ সুতরাং যে বেক্তি শরিয়সত মানবে না আর গোনাহ করবে সে তার মুরিদ হওয়ার সকল অঙ্ঘিকার ভঙ্গ করবে ৷ অবশ্যই তার ইমান ও কমতে থাকবে ৷ ( ফয়জুল বারী , সরহে বুখারী ১ খ ৪৮ নং পৃষ্টা )
জাকারিয়া তার কিতাব (শরীয়ত ও তরিকত কা তালাজুম ) এর ১২ নং পৃষ্টা তে উপরের বর্ণিত ইমাম হাম্বল  এর কথা উল্লেখ করে তার ব্যাখ্যাতে লিখেছে যে ;- মুজতাহিদ ইমামগণ মুরিদ হওয়াকে ঈমানী বিষয় বলে আখ্যায়িত করলেন ৷ কারণ তাদের কাছে বায়েত ও মুরিদ হওয়াই ছিল ঈমানী বিষয়৷ আজকাল যদিও আলেমগণ বায়াত হওয়ার বিষয় গুরত্ব দেন না৷ কেন না হতে পারে বায়েত হওয়া ছাড়াই তারা ইমান হাসিল করেছেন ৷তাদের কবরে তারা জবাব দিবে এবং আমাদের কবরে আমরা জবাব দিব ৷ তাই আমাদের উচিত কোরান ,হাদিস ও মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ করা৷ ইমাম গনের মতের বিরোধিতা না করা৷ কেননা কোরান বলে বায়েত হলে আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া যায় ৷ আর হাদিস বলে বায়েত না হলে বেইমান হয়ে মরতে হয় ৷

No comments:

Post a Comment