Saturday, November 26, 2016

জমহুরে উম্মতের খিলাফ ফতওয়া প্রদান সম্পর্কে

কাযযাবুদ্দীন সর্বশেষে তার জিহালতীর সবটুকু উদ্গীরণ করে দিয়ে তার কলঙ্কিত ও গুমরাহীমূলক রেসালা “ভ্রান্ত মতবাদে” লিখেছে, “উল্লেখ্য রাজারবাগ শরীফ এর মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মুজতাহিদ হিসেবে জমহুরে উম্মতের খিলাফ অনেক মাসায়েলও উদ্ভাবন করেছেন। যেমন (১) চার কল্লী টুপি পরিধান করা খাছ সুন্নত (২) মুসলমানদের উপর চরম ধরনের বিপদাপদ আসলে ফজরের নামাযে কুনূতে নাযেলা পাঠ করা জায়িয নয়, এরূপ কুনূতে নাযিল পাঠ করা হলে নামায ফাসেদ হয়ে যায় (৩) নামের শুরুতে বহু খেতাব ব্যবহার করা সুন্নত। (৪) ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের জন্য বড় ঈদ ইত্যাদি।”
মিথ্যাচারিতার খণ্ডমূনলক জবাব
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রথমেই মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি এজন্য যে, কাযযাবুদ্দীন অনিচ্ছাসত্ত্বে হলেও রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে ‘মুজতাহিদ’ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। যদিও তার এ স্বীকার করে নেয়া বা অস্বীকার করাতে আমাদের কিছুই যায় আসে না। আরো শুকরিয়া জানাই এজন্য যে, কাযযাবুদ্দীন নিজেই প্রমাণ করলো যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক ইজতিহাদকৃত উল্লিখিত মাসয়ালা চারটি সঠিক। কারণ, সে উক্ত মাসয়ালা ৪টি উল্লেখ করেছে কিন্তু তা দলীল দ্বারা খণ্ডন করে জমহুর উম্মতের খিলাফ প্রমাণ করার দুঃসাহস তার হয়নি। সে ভাল করেই জানে যে, উল্লিখিত মাসয়ালাগুলো খণ্ডন করার মত যোগ্যতা কাযযাবুদ্দীন তো দূরের কথা, পৃথিবীর কোন আলিমেরই নেই। তাই সে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র “জমহুরে উম্মতের খিলাফ” বলেই ক্ষান্ত হয়েছে।

মূলতঃ “জমহুরে উম্মত” কথাটি উল্লেখ করা কাযযাবুদ্দীনের একটি জঘন্য ধরনের প্রতারণা মাত্র। কারণ “জমহুরে উম্মত” দ্বারা সে কাদেরকে বুঝাতে চেয়েছে তা স্পষ্ট নয়। কাযযাবুদ্দীন যদি “জমহুরে উম্মত” দ্বারা দেওবন্দীদেরকে বুঝিয়ে থাকে, তবে তার কথাটি ঠিকই রয়েছে। কারণ দেওবন্দীরা নতুন উদ্ভাবিত পাঁচ কল্লি আর কিস্তি টুপিকেই সুন্নত বলে থাকে। দেওবন্দীরা মানসূখ আমল কুনূতে নাযিলা পাঠ করে থাকে এবং পাঠ করাকে জায়িয বলে। দেওবন্দীরা সুন্নত আমল নামের পূর্বে লক্বব ব্যবহার করাকে নাজায়িয বলে থাকে, আর ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার হাবীব উনার আগমনের দিনকে বড় ঈদ মানা তো দূরের কথা, ঈদই মানে না বরং এটাকে বিদয়াত বলে ফতওয়া দেয় (নাউযুবিল্লাহ)। অথচ তাদের উল্লিখিত প্রতিটি আমল ও বক্তব্যই কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ। সুতরাং রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ইজতিহাদকৃত উল্লিখিত মাসয়ালাগুলো কাযযাবুদ্দীনের কথিত জমহুরে উম্মত বা দেওবন্দীদের খিলাফ হওয়াই স্বাভাবিক।
আর যদি কাযযাবুদ্দীন “জমহুরে উম্মত” দ্বারা পূর্ববর্তী অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণ উনাদের কথা বুঝিয়ে থাকে, তবে এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কাযযাবুদ্দীনেনর উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই ভুল ও মিথ্যা। কারণ কাযযাবুদ্দীন কেন দেওবন্দীরা সকলে মিলেও যদি ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করে তবু এরূপ একটি দলীলও পেশ করতে পারবে না যে, জমহুরে উম্মত বা পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারা উল্লিখিত মাসয়ালার খিলাফ মত পেশ করেছেন। কেননা উল্লিখিত প্রতিটি মাসয়ালা-মাসায়িলের পেছনেই কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও  ক্বিয়াসের বহু দলীল রয়েছে। জমহুরে উম্মত বা অনুসরণীয় ইমাম- মুজতাহিদগণ উনাদের পক্ষে কস্মিনকালেও কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ মত পেশ করা সম্ভব নয়।
স্মর্তব্য যে, এখানে উল্লিখিত মাসায়িলগুলোর বিশদ বা দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনার কোনই প্রয়োজন নেই। কারণ উল্লিখিত প্রতিটি মাসায়িলের দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা মাসিক আল বাইয়্যিনাতে রয়েছে। এখানে শুধু এতটুকু বলতে চাই যে, কাযযাবুদ্দীনের ইল্মের যদি এতই জোর থেকে থাকে তবে উল্লিখিত মাসায়িলগুলোর দলীলভিত্তিক খণ্ডনমূলক আলোচনায় সে আসলোনা কেন? উল্লিখিত মাসায়িলগুলো যে, জমহুর উম্মতের খিলাফ তার দলীল পেশ করলো না কেন? উল্লিখিত মাসায়িলের বিপরীতে জমহুরে উম্মতের যে মত সেটা উল্লেখ করলো না কেন? এর দ্বারা কি এটাই প্রমাণিত হয় না যে, কাযযাবুদ্দীন মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছে।
মূলতঃ উল্লিখিত চারটি মাসায়িলের ক্ষেত্রে কেন বরং মাসিক আল বাইয়্যিনাতে এ পর্যন্ত যত ফতওয়া ও মাসয়ালাই প্রকাশ করা হয়েছে তার একটিও কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ নয়। বরং প্রতিটিই কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসসম্মত। কাযযাবুদ্দীনের প্রতি চ্যালেঞ্জ রইল যদি তার ইল্মের এতই জোর থাকে তবে যেন সে প্রকাশ্য বাহাছে অবতীর্ণ হয়ে দলীলের দ্বারা তা ভুল প্রমাণ করে দেয়। আর যদি বাহাছে বসার সৎ সাহস তার না থাকে তবে যেন সে লিখিতভাবে দলীল দ্বারা তা ভুল প্রমাণ করে দেয়। নচেৎ প্রমাণিত হবে যে, কাযযাবুদ্দীন আসলেই জাহিল, গুমরাহ, প্রতারক ও ভণ্ড।

No comments:

Post a Comment