Saturday, November 26, 2016

প্রসঙ্গ- হক্কানী পীর বা আলিম”

মিথ্যাবাদী, তথাকথিত মুফতী, স্বঘোষিত মুশরিক শামছুল হক তার কলঙ্কিত রেসালা.. “বেশরা…দের গোমর ফাঁক”-এর ৮৩ পৃষ্ঠায় লিখেছে “…. হক্কানী পীর নয়। আর ৮৪ পৃষ্ঠায় লিখেছে…..আলিম নয়।”
“খণ্ডনমূলক জবাব”
মিথ্যাবাদী, বদচরিত্র তথাকথিত মুফতী স্বঘোষিত মুশরিক তার উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কোন দলীলই পেশ করতে পারেনি, অর্থাৎ রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি কেন বা কি কারণে “হক্কানী পীর বা আলিম নন” তা মোটেও উল্লেখ করেনি। কাজেই কেউ হক্ব বা না হক্ব, আলিম বা জাহিল হওয়ার জন্য কারো মুখের কথা দলীল নয়। বরং দলীল হচ্ছে, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াস। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াসে হক্কানী পীর বা আলিমের যে সংজ্ঞা বা পরিচিতি উল্লেখ করা হয়েছে। এর সাথে যাদের মিল থাকবে তারা অবশ্যই হক্কানী পীর বা আলিম যদিও মিথ্যাবাদী শামছুল হকের ন্যায় আরো অনেকেই তা অস্বীকার করে। আর উক্ত সংজ্ঞায় যারা পড়বে না তারা কস্মিনকালেও হক্কানী পীর বা আলিম নয়, যদিও মিথ্যাবাদী শামছুল হকের ন্যায় আরো অনেকেই তাদেরকে হক্কানী বলে মুখে ফেনা তুলে।

মিথ্যাবাদী, প্রতারক, তথাকথিত মুফতী, স্বঘোষিত মুশরিক “শামছু ….. হক্কানী পীর বা আলিমের কথা উল্লেখ করেছে ঠিকই। কিন্তু হক্কানী পীর বা আলিমের সংজ্ঞা কি? হক্কানী পীর বা আলিম কে? তার কোন পরিচিতি সে উল্লেখ করেনি। উল্লেখ না করার কারণও অবশ্য রয়েছে। তাহলো- মিথ্যাবাদী, প্রতারক “শামছু….” ভাল করেই জানে যে, “হক্কানী পীর বা আলিমের সঠিক সংজ্ঞা বা পরিচিতি তুলে ধরলে রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হক্কানী পীর বা আলিম” হিসেবে সাব্যস্ত হবেন। আর শামছু ও তার গুরুরা নাহক্ব ও জাহিল হিসেবে সাব্যস্ত হবে। সাথে সাথে তার উল্লিখিত বক্তব্যও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে। তাই সে হক্কানী পীর বা আলিমের সঠিক সংজ্ঞা বা পরিচিতি উল্লেখ করেনি।
মিথ্যাবাদী শামছূ…..’র মিথ্যাচারিতা ধোঁকাবাজি, জিহালতী ও জালিয়াতিমূলক চেহারাটা জনসম্মুখে উন্মোচন করে দেয়ার লক্ষ্যে হক্কানী পীর বা আলিমের সংজ্ঞা বা পরিচিতি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের দৃষ্টিতে সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরা হলো-
হক্কানী আলিম-এর পরিচয়
“উল্লেখ্য, عالم (আলিমুন) শব্দটি বাবে سمع يسمع থেকে উদ্ভূত। উক্ত শব্দটি اسم فاعل বা কর্তৃবাচক শব্দরূপ। এর লুগাতী বা আভিধানিক অর্থ হলো- একজন জ্ঞানী পুুরুষ। আর ইস্তিলাহী বা পারিভাষিক অর্থে – আলিম তাকেই বলে, যিনি দ্বীনি ইলম তথা ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের অধিকারী। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি আলিম হতে হলে তার জন্য প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ইসলামের প্রতিটি বিষয়ে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী হওয়া। এরপর প্রথমত তাকে ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফ উভয়টাই অর্জন করতে হবে।
কেননা হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
عن ابى الدرداء رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان العلماء ورثة الانبياء وان الانبياء لم يورثوا دينارا ولا درهما وانما ورثوا العلم
অর্থ: “হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয় আলিমগণ নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের ওয়ারিছ। আর নিশ্চয় নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা কোন দীনার-দিরহাম রেখে যাননি। বরং ইলম রেখে গেছেন।” (তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, আহমদ, মিশকাত, মায়ারিফুস সুনান, উরফুশ শাযী, বযলুল মাজহুদ, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুতত্বীবী, আত তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব)
উল্লেখ্য যে, নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ওয়ারিছস্বত্ব হিসেবে দু’প্রকার ইলম রেখে গেছেন। অর্থাৎ ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফ।
যে প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
عن الحسن رحمة الله عليه قال العلم علمان فعلم فى القلب فذاك العلم النافع وعلم على اللسان فذالك حجة الله عز وجل على ابن ادم
অর্থ:“হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত তিনি ইরশাদ করেন, ইলম দু’প্রকার। (১) ক্বলবী ইলম (ইলমে তাছাউফ) যা উপকারী ইলম, (২) জবানী ইলম (ইলমে ফিক্বাহ) যা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে বান্দার জন্য দলীল স্বরূপ।” (দারিমী, বাইহাক্বী, দাইলামী, তারগীব ওয়াত তারহীব, তারীখ, আব্দুল বার, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত আশয়াতুল, লুময়াত, শরহুত্ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়ারিছ স্বত্ব হিসেবে ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফ উভয়টিই রেখে গেছেন। কাজেই যে ব্যক্তি উভয়টিই শিক্ষা করলো, সে ব্যক্তিই নায়িবে রসূল বা হাক্বীক্বী আলিম।
উপরোল্লিখিত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় ইমামে রব্বানী, মাহবুবে সুবহানী, কাইয়ুমে আউয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত কিতাব “মাকতুবাত শরীফ”-এ উল্লেখ করেন-
العلماء ورثۃ   الانبیاء علممیکہ از انبیاء علیہم الصلوات والتسلیمات باقی ماندہ است دونوع است علم احکام وعلم اسرار وورث کسی ہست کہ اورا ہردونوع علم سہر بودنہ أنکہ اورا ازیک نوع نصب بودنہ از نوع دیگر کہ أن منافی وراثت است چہ وراثت را از جمیع انواع ترک مورث نصیب است نہ ازبعض وأنکہ اورا ازمعین نصیب است داخل غرما است کہ نصیب اوبجنس حق او تعلق گرفتہ است
অর্থ: “আলিমগণ নবী আলাইহিমুস সালামগণের ওয়ারিছ।” এ হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আলিম তারাই, যাঁরা নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের রেখে যাওয়া ইলমে আহকাম (ইলমে ফিক্বাহ) ও ইলমে আসরার (ইলমে তাছাউফ) উভয় প্রকার ইলমের অধিকারী। অর্থাৎ তিনিই প্রকৃত ওয়ারিছ বা স্বত্বাধিকারী। আর যে ব্যক্তি শুধুমাত্র এক প্রকার ইলমের অধিকারী, সে ব্যক্তি নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রকৃত ওয়ারিছ নন। কেননা পরিত্যক্ত সম্পত্তির সকল ক্ষেত্রে অংশীদারী হওয়াকেই ওয়ারিছ বলে। আর যে ব্যক্তি পরিত্যক্ত সম্পত্তির কোন নির্দিষ্ট অংশের অধিকারী হয় তাকে গরীম বলে। অর্থাৎ সে ওয়ারিছ নয় গরীমের অন্তর্ভুক্ত।
হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মিশকাত শরীফ-এর বিখ্যাত শরাহ “মিরকাত শরীফ”-এ উল্লেখ করেন যে, মালিকী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
من تفقه ولم يتصوف فقد تفسق ومن تصوف ولم يتفقه فقد تزندق ومن جمع بينهما فقد تحقق
অর্থ: যে ব্যক্তি ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করলো, কিন্তু ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করলো না, সে ফাসিক। আর যে ব্যক্তি ইলমে তাছাউফ শিক্ষা করলো কিন্তু ইলমে ফিক্বাহ শিক্ষা করলো না, সে যিন্দিক (কাফির)। আর যে ব্যক্তি উভয়টি শিক্ষা করলো, সে মুহাক্কিক তথা হক্কানী আলিম।”
দ্বিতীয়ত আলিম ওই ব্যক্তি যার অন্তরে তাক্বওয়া বা খোদাভীতি রয়েছে। অর্থাৎ যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়ে হারাম, নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থাকেন। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন-
انما يخشى الله من عباده العلماء
অর্থ: “নিশ্চয় মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আলিমগণই মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন।” (সূরা ফাতির : আয়াত শরীফ-২৮)
এ আয়াত শরীফ-এর তাফসীর জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল হাম্বলী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম, ইমামুল আইম্মাহ, ইমামুছ্ ছিদ্দীক্বীন, শায়খুল মুহাদ্দিছীন, হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে। তিনি এ আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বলেন, “যাঁর ভিতর যত বেশি খোদাভীতি রয়েছে তিনি  ততো বড় আলিম।” উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে খোলাছায়” উল্লেখ আছে যে-
العلماء سے اصطلاحی عالم یعنی کتابیں پرہ لینے والے مراد نہیں بلکہ کبریائے ذات وعظمت صفات کو نور ایمان شمع عرفان سے دیکہنے والے اسلئے کہ اصحاب رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم وارباب ولایت وقبول سبکے سب علماء کتابی نہ تہی گو اونکا علم نافع اعلی درجے کاتہا
অর্থ: উক্ত আয়াত শরীফ-এ العلماء শব্দ দ্বারা কিতাবসমূহ পাঠকারী তথা দাওরা বা টাইটেল পাসকারীদেরকে বুঝানো হয়নি। বরং কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত “আলিম” উনারাই, যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার মহিমাময় জাত ও অসীম গৌরবময় ছিফাতসমূহকে ঈমান ও মা’রিফতের নূরের আলোকে অবলোকন করেছেন। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রিয়তম ছাহাবী আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ ও (পরবর্তী) বিলায়েতপ্রাপ্ত ও মকবুল ওলীআল্লাহগণ উনারা কিতাবী তথা দাওরা বা টাইটেল পাস আলিম ছিলেন না। তথাপিও উনারা সর্বোচ্চ স্তরের উপকারী ইলমের অধিকারী ছিলেন। অর্থাৎ উনারাই কুরআন শরীফ-এ বর্ণিত প্রকৃত আলিম ছিলেন।
উল্লিখিত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিখ্যাত আলিম, ইমামুল মুফাসসিরীন, হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রসিদ্ধ “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লেখ করেন-
عن ابن مسعود رضى الله تعالى انه قال ليس العلم عن كثرة الحديث ولكن العلم عن كثرة الخشية وقال احمد بن صالح المصرى عن ابن وهاب عن مالك قال ان العلم ليس لكثرة الرواية وانما العلم نور يجعله الله تعالى فى القلب
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, যে ব্যক্তি অধিক হাদীছ শরীফ জানে সে ব্যক্তি আলিম নয়। বরং যাঁর মধ্যে আল্লাহভীতি অধিক সে ব্যক্তিই আলিম। আর হযরত আহমদ বিন ছালেহ মিছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, অধিক রিওয়ায়েত শিক্ষা করলেই আলিম হওয়া যায়না। মূলত ইলম হচ্ছে নূর বা জ্যোতি স্বরূপ। মহান আল্লাহ পাক তিনি তা মানুষের অন্ত:করণে দান করেন।”
উক্ত “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লিখিত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় আরো উল্লেখ আছে যে, “হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আলিমগণ তিনভাগে বিভক্ত। (১) আলিম বিল্লাহ অর্থাৎ যারা শুধু মহান আল্লাহ পাক উনাকেই জানেন। কিন্তু উনার হুকুম-আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ। (২) আলিম বিআমরিল্লাহ। অর্থাৎ যারা শুধু হুকুম-আহকাম সম্পর্কে জানেন। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার সম্পর্কে অজ্ঞ বা আল্লাহভীতি নেই। (৩) আলিম বিল্লাহ ওয়া বিআমরিল্লাহ। অর্থাৎ যাঁরা মহান আল্লাহ পাক ও উনার শরীয়তের হুকুম-আহকাম ও ফারায়িজ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন। (উনারাই হাক্বীক্বী বা প্রকৃত আলিম।)”
তৃতীয়ত: ঐ ব্যক্তিই হাক্বীক্বী আলিম যিনি অর্জিত ইলম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন অর্থাৎ সুন্নতের পূর্ণ অনুসরণ করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
عن سفيان ان عمر رضى الله تعالى عنه قال لكعب رضى الله تعالى عنه من ارباب العلم؟ قال الذين يعملون بما يعلمون قال فما اخرج العلم من قلوب العلماء؟ قال الطمع.
অর্থ: “(আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি হযরত কা’ব ইবনুল আহবার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন) আলিম বা ইলমের অধিকারী কে? তিনি উত্তরে বললেন, যাঁরা ইলম অনুযায়ী আমল করেন। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পুনরায় জিজ্ঞেসা করলেন, কোন জিনিস আলিমদের অন্তর থেকে ইলমকে বের করে দেয়? তিনি উত্তরে বললেন, লোভ অর্থাৎ দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইত্যাদি হাছিলের আকাঙ্খা।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)
বিশিষ্ট তাবিয়ী, আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আলিম কে? তিনি জবাবে বলেন-
انما الفقيه الزاهد فى الدنيا والراغب الى الاخرة والبصير بذنبه والمداوم على عبادة ربه والوارع الكف عن اعرض المسلمين والعفيف عن اموالهم والناصح لجماعتهم.
অর্থ: “ফক্বীহ বা আলিম হলেন ওই ব্যক্তি, যিনি দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন, গুনাহের প্রতি সতর্ক, সর্বদা মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে মশগুল, পরহিযগার বা সুন্নতের পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং উনার অধীনস্থদেরকে নছীহত করেন।”
উপরোক্ত দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, হক্কানী আলিম বা সত্যিকার নায়িবে নবী তিনিই (১) যিনি দ্বীন ইসলামের প্রতিটি বিষয়েই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করেন, (২) ইলমে ফিক্বাহ অর্জন করার সাথে সাথে একজন হক্কানী মুর্শিদ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে ইলমে তাছাউফ চর্চা করত অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহভীতি বা তাক্বওয়া অর্জন করেছেন (৩) অর্জিত ইলম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন (৪) সুন্নতের পূর্ণ পায়রবী করেন (৫) হারাম নাজায়িয ও শরীয়ত বিরোধী কাজে লিপ্ত হননা। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর দৃষ্টিতে উনারাই হক্কানী আলিম বা নায়িবে নবী।
অতএব, “হক্কানী পীর বা আলিমের” উপরোক্ত সংজ্ঞা বা পরিচিতি দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হক্কানী মুর্শিদ ও আলিম। কারণ তিনি ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের পরিপূর্ণ অধিকারী, পরিপূর্ণরূপে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী, পরিপূর্ণরূপে শরীয়ত তথা সুন্নতের অনুসরণকারী।
কাজেই তথাকথিত মুফতী, স্বঘোষিত মুশরিক শামছুল হক্বের উপরোক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা, প্রতারণামূলক ও জিহালতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হলো।

No comments:

Post a Comment