Saturday, November 26, 2016

ক্বাইয়্যূমুয্ যামান’ লক্বব ব্যবহার করা সম্পর্কিত মিথ্যাচারিতা

আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীন তার গোমরাহীমূলক রেসালা “ভ্রান্ত মতবাদে” লিখেছে, “…… উনার খেতাব সমূহের মধ্যে কুফরী জ্ঞাপক খেতাবও রয়েছে। যেমন “কাইউমুয্ যামান” খেতাবটি। ‘কাইউম’ শব্দটি আল্লাহ তায়ালার একটি ছিফতী নাম যার অর্থ জগতের ধারক ও রক্ষক। অতএব, কাইউমুয্ যামান অর্থ হবে যামানার ধারক ও রক্ষক। একথাটি একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালার ব্যাপারেই প্রযোজ্য, অন্য কারো ব্যাপারে নয়। কোন মাখলূক কাইউম হতে পারেনা বরং আব্দুল কাইউম বা কাইউমের গোলাম হতে পারে। কোন মাখলুকের হাতে জগত পরিচালনার ক্ষমতা ন্যস্ত থাকতে পারেনা। সুতরাং কোন মানুষের ব্যাপারে এ উপাধি ব্যবহার নিঃসন্দেহ কুফরী জ্ঞাপক।”
মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব
কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্যের মূল বিষয়বস্তু হলো (১) ‘ক্বাইয়্যূম’ শব্দটি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার ব্যাপারেই প্রযোজ্য, অন্য কারো ব্যাপারে নয়। (২) কোন মাখলূক ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারেনা। (৩) কোন মানুষের ব্যাপারে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার কুফরী। (৪) কোন মাখলূকাতের হাতে জগত পরিচালনার ক্ষমতা  নেই।

এর জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, ‘ক্বাইয়্যূম’ শব্দটি একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার ব্যাপারেই প্রযোজ্য অন্য কারো ব্যাপারে নয়। এ কথাটি কাযযাবুদ্দীনের একান্তই নিজস্ব মনগড়া ও বানানো। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর কোথাও একথা উল্লেখ নাই। অর্থাৎ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর কোথাও ‘ক্বাইয়্যূম’ শব্দটিকে আল্লাহ পাক উনার জন্য খাছ করা হয়নি। ‘ক্বাইয়্যূম’ শব্দটি যদি আল্লাহ পাক উনার জন্যেই খাছ থাকতো, তবে জগতখ্যাত আলিমে দ্বীন ও মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেকে ‘ক্বাইয়্যূমে আউয়াল’ বলে উল্লেখ করতেন না। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেকে ‘ক্বাইয়্যূম’ হিসেবে প্রকাশ করা এটাই প্রমাণ করে যে, ‘ক্বাইয়্যূম’ মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যেই খাছ নয়। যদি মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য খাছ হতো তবে তিনি নিজের ব্যাপারে এটা প্রকাশ করতেন না। কারণ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কম জানতেন না। সে যামানার বড় বড় আলিমগণ উনার মুরীদ ছিলেন। যেমন ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তিনিও হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ‘ক্বাইয়্যূম’ হিসেবে মেনে নিয়েছেন। তিনি বা অন্য কোন অনুসরণীয় হক্কানী আলিমই হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধির বিরোধিতা করেননি। এতে কি এটাই প্রমাণিত হয়না যে, ‘ক্বাইয়্যূম’ শুধু মহান আল্লাহ পাক উনার জন্যেই খাছ নয়, বরং অন্যের ব্যাপারেও তা প্রযোজ্য। অবশ্যই প্রমাণিত হয়।
কাজেই কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য যে ডাহা মিথ্যা, তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা। কারণ কাযযাবুদ্দীনের বক্তব্য যদি সত্য হিসেবে ধরে নেয়া হয়, তবে এটাই প্রমাণিত হয় যে, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ অন্যান্য আলিমগণ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ জানতেন না। নাঊযুবিল্লাহ!
হাক্বীক্বত কাযযাবুদ্দীনই কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞই শুধু নয়, বরং আশাদ্দুদ দরজার জাহিলও বটে। ইলমে জাহির তার বকদরে নিছাব কিছুটা থাকলেও ইলমে তাছাউফে সে সম্পূর্ণ শুন্য। তাই সে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধির ব্যাপারে এরূপ জিহালতপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে।
দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, “কোন মাখলূক কাইউম হতে পারেনা।” কাযযাবুদ্দীনের এ বক্তব্যও ভুল, মনগড়া, দলীলবিহীন ও স্ববিরোধী। মূলতঃ মাখলূক অবশ্যই ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারে। তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি যে অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ সে অর্থে নয়। যেমন, মাখলূক ‘মাওলানা’ হতে পারে, তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি যে অর্থে ‘মাওলানা’ সে অর্থে নয়।  মূলতঃ মানুষ ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারে বলেই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং ইমাম মা’ছূম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদেরকেসহ আরো অনেককেই ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি প্রদান করেছেন।
স্মর্তব্য যে, কাযযাবুদ্দীন নিজেও স্বীকার করেছে যে, মাখলূক ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারে। যেমন সে ‘ভ্রান্ত মতবাদের’ টিকায় লিখেছে যে, “…….  হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, উনার ছেলে ইমাম মা’ছূম, উনার ছেলে হুজ্জাতুল্লাহ নকশবন্দ, উনার ছেলে আবুল উলা প্রমূখ …. এই খেতাব ব্যবহার করে থাকলেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রূপক অর্থেই ব্যবহার করে থাকবেন।”
কাযযাবুদ্দীনের উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা দু’টি বিষয় সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয়- (১) হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ আরো অনেকেই ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন। সুতরাং কাযযাবুদ্দীন নিজেই স্বীকার করলো যে, মাখলূক ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারে। (২) রূপক অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করা জায়িয। অর্থাৎ কাযযাবুদ্দীন স্বীকার করলো যে, মাখলূকাত ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারে, তবে রূপক অর্থে। যদি তাই হয়ে থাকে, তবে কাযযাবুদ্দীনের এ বক্তব্যের কি মূল্য থাকতে পারে যে, ‘ক্বাইয়্যূম’ শব্দটি শুধু আল্লাহ পাক উনার জন্যেই প্রযোজ্য, অন্য কারো ব্যাপারে নয়। মাখলূক ‘ক্বাইয়্যূম’ হতে পারেনা।” সে তো নিজেই হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকেসহ আরো অনেককেই ‘ক্বাইয়্যূম’ স্বীকার করে নিয়েছে। সুতরাং কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য অর্থহীন, দলীলবিহীন ও স্ববিরোধী বলে সাব্যস্ত হলো।
তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, “কোন মানুষের ব্যাপারে ‘কাইউম’ উপাধি ব্যবহার নিঃসন্দেহে কুফরী।” কাযযাবুদ্দীনের এই মতানুযায়ী ‘ক্বাইয়্যূমুয্ যামান’ উপাধি ব্যবহারকারী সকলেই কাফির। সে মতে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত ইমাম মা’ছূম রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত হজ্জাতুল্লাহ নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবুল উলা রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শাহ ওলীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত আব্দুল হাই ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি সকলেই কাফির। কারণ উনারা সকলেই ‘ক্বাইয়্যূমুয্ যামান’ লক্বব ব্যবহার করেছেন। নাঊযুবিল্লাহ!
হাক্বীক্বত কাযযাবুদ্দীন নিজেই কাফির হয়ে গেল। কারণ উনাদেরকে যে  কাফির বলবে সে যে কত বড় কাফির তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা। মূলতঃ কাযযাবুদ্দীন রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার প্রতি কুফরীর ফতওয়া দিতে গিয়ে সে নিজেই কাফির বলে সাব্যস্ত হলো। এজন্যে বলা হয়, “অপরের জন্যে কুয়ো খুদলে, সে কুয়োয় নিজেকেই পরতে হয়।”
কাযযাবুদ্দীন হয়তো এ কুফরী থেকে বাঁচার জন্যে বলবে যে, উনারা ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন রূপক অর্থে। তাই উনাদেরটা কুফরী হবে না। এখন আমাদের প্রশ্ন হলো, রূপক অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করা জায়িয। একথা তো তার উক্ত বক্তব্যে উল্লেখ নেই। সে তো আম বা সাধারণভাবেই একথা বলেছে। আর উনারা যে রূপক অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন, একথারই বা প্রমাণ কোথায়?
পাশাপাশি রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিও যে রূপক অর্থে ব্যবহার করছেন না বা তিনি সরাসরি অর্থে ব্যবহার করেছেন এ প্রমাণই বা তার হাতে কোথায়? কাযযাবুদ্দীন কি প্রমাণ করতে পারবে যে, উনারা রূপক অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন? বরং উনারা যে অর্থে “ক্বাইয়্যূম” উপাধি ব্যবহার করেছেন তা বিশ্বখ্যাত ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী কিতাব “রওযাতুল কাইয়্যূমিয়াত” এর ১ম খ- ১৭২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
قیوم اس شخص کو کھتے ھیی کہ جس کے ما تحت تمام اسماء وصفات شیونات اعتبارات اور اصول بوں اور تمام کزاشتہ اور انندہ مخلوقات کے عالم موجودات، انسان، وحوش، پرند، نباتات، ھرذی روح، پتھر، درخت، بروبحر  کی برشی، عرش، کرسی، لوح، قلم، ستاررہ، ثوابت، سورج، چاند، اسمان، بروج سب اس کے سائے میں بوں. افلاک و بروج کی حرکت وسکون، سمندرون کی لہروں کی حرکت، در ختوں کے بتوں کا بلنا، بارش کس قطروں کا گرنا، پھلوں  کا پکنا، پرندوں ک چونچ پھیالانا، دن، رات کا پیدا ہونا، اور گردش کنندہ اسمان کی موافق یا  موافق رفتار سب کچہ اس کے حکم سے ہوتا ھے، بارش کا ایک قطرہ ایسا نہیں جو اسکی اطلاع بغیر کرتا ہو، زمیں پر حرکت وسکون اسکی مرض کے بغیر نھیں جور ام وخوشی اور ہے چینی اور رنج اھل زمین کو ہوتا ھے اس کے حکم بغیر  نھی ہوتا. کوئی گھڑی، کوئی بفتہ، کوئی مھینہ، کوئی سال، ایسا نھیں جواس کے حم بغیر اپنے اپ میں نیکی بدی کا تصرف کر سکے، غلہ کی پیدائش، نباتات کا اکنا غرضیکہ جو کچہ بھی خیال میں اسکتا ہے وہ اسکی مرضی اور حکم بغیر ظھور میں نھیں اتا. روئے زمیں پر جس قدر زاھد، عابد، ابرار اور مقرب تسبیح، ذکر فکر تقدیس اور تنزیہ ھيں عبادت گاہوں، جھو نپڑوں کئیوں پھاڑ اور دریا کنارے زبان قلب روح سر خفی اخفی اور نفس سے شاغل اور معتکف ھیں اور حق طلبی کی راہ میں مشغول ھیں سب اسی کی مرض سے مشغول ھیں گو انہیں اس بات کا علم ہویا نہ ھو.
অর্থ: ‘ক্বাইয়্যূম’ এমন মহান ব্যক্তিত্বকে বলা হয়, সমস্ত নাম, ছিফত এবং সমস্ত মহত্ব তথা মর্যাদা এবং সমস্ত বিধি-বিধান যাঁর নিয়ন্ত্রণে। অতীত এবং ভবিষ্যত সৃষ্টি জগতের সমস্ত সৃষ্টি, যেমন মানুষ (জীব জানোয়ার) পশু-পাখি, তরু লতা, প্রত্যেক জীব, পাথর, গাছ-পালা, জল-স্থলের সব বস্তু যেমন আরশ কুরসী লৌহ-কলম চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজী আসমানের নক্ষত্রের প্রবাহ এবং স্থিরতা, এমনকি সমুদ্রের প্রবাহ এবং স্থিরতা এমন কি সমুদ্রের ঢেউ তরঙ্গের এবং গাছের পাতা ঝড়ে পড়া, এমনকি বৃষ্টিপাত হওয়া, পাখির ঠোঁট ফেলা, দিন রাতের সৃষ্টি হওয়া, আসমানের নিজ কক্ষপথে যথাযথ পরিভ্রমন সমস্ত কিছুই ক্বাইয়্যূমুয্ যামানের নির্দেশক্রমেই হয়ে থাকে। বৃষ্টির এক ফোঁটা পানিও উনার অজ্ঞাতসারে বর্ষিত হয় না। জমিনে ভূমিকম্প হওয়া ও জমিন স্থীর থাকা উনার ইচ্ছাতেই হয়ে থাকে। (এমনকি) আরাম-আয়িশ, অস্থিরতা জমিনবাসীর মৃত্যু উনার নির্দেশেক্রমে হয়ে থাকে। কোন ঘন্টা, কোন দিন, কোন সপ্তাহ, কোন মাস, এমনকি কোন বৎসর এমন নয় যে, উনার নির্দেশের বাইরে নিজে নিজেই তার ভাল মন্দের বিচার করে চলতে পারে এবং শস্যের সৃষ্টি, তরুলতার উৎপাদন মোটকথা যা কিছুই ধারণায় আসতে পারে তা সব কিছু উনার নির্দেশ ও ইচ্ছার বাইরে প্রকাশ পায় না। জমিনে যে পরিমাণ যাহিদ, আবিদ, নেকবখত, নৈকট্যপ্রাপ্তগণ, তাসবীহ, যিকির, ফিকির, পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা এবং ইবাদতখানা, পাহাড়, সমুদ্র, যবান, ক্বালব, রুহ, সির, খফী, আখফা, নফস ইত্যাদি লতিফাসমূহের মুরাকাবায় ব্যস্ত এবং মু’তাকিফ অর্থাৎ নিভৃতে অবস্থানকারী এবং সত্য সন্ধানে মশগুল আছেন এমন সব কিছুই ক্বাইয়্যূমুয্ যামানের ইচ্ছাতেই হয়ে থাকে। যদিওবা তাদের এই বিষয়ে জ্ঞান থাকুক বা না থাকুক।”
কাজেই জাড়িজুড়ি মেরে কুফরীর গ্যাড়াকল থেকে বের হয়ে আসার কোনই সুযোগ কাযযাবুদ্দীনের নেই। কারণ কাযযাবুদ্দীন হক্কানী ওলীগণ উনাদেরকে কাফির ফতওয়া দিয়ে নিজেই নিজেকে কাট্টা কাফির হিসেবে সাব্যস্ত করেছে।
চতুর্থতঃ বলতে হয় যে, “কোন মাখলূকাতের হাতে জগত পরিচালনার ক্ষমতা নেই।” কাযযাবুদ্দীনের এ বক্তব্যটিও জিহালতপূর্ণ। আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। উনার হুকুম বা নির্দেশেই জগতের সব কিছু পরিচালিত হয়। তবে তিনি জগত পরিচালনার ক্ষেত্রে যেরূপ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিয়োগ করেছেন, তদ্রুপ মানুষের মধ্যে যারা খাছ ওলীউল্লাহ তথা গাউছ, কুতুব, আবদাল বা ‘ক্বাইয়্যূম’ রয়েছেন, উনাদের কাছেও তিনি জগত পরিচালনার অনেক দায়িত্ব ন্যস্ত করে থাকেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নবী-রসূল, ওলী ও হযরত ফেরেশ্তাগণ উনাদের মাধ্যমেই জগত পরিচালনা করে থাকেন। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার অক্ষমতা নয় বরং সম্মান ও মর্যাদার কারণ। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দার সবকিছুই জানেন তারপরও ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বান্দার আমল সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক উনাকে অবহিত করে থাকেন। এর অর্থ এই নয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি জানেন না তাই ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা অবহিত করেন। আল্লাহ পাক তিনি যে ওলী ও ফেরেশতাগণ উনাদের দ্বারা জগত পরিচালনা করেন, তার প্রমাণ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এই রয়েছে। যেমন কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
فال مدبرات امرا
অর্থাৎ, “জগতের কার্য নির্বাহকারী।” (সূরা নাযিয়াত: আয়াত শরীফ – ৫)
উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশ্বখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে খাযিন” ও “বাগবী শরীফ”-এ উল্লেখ আছে,
(فالـمدبرات امرا) قال حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه هم الـملئكة … قال عبد الرحمن بن سابط يدبر الامر فى الدنيا اربعة جبريل عليه السلام و ميكائيل عليه السلام وملك الموت عليه السلام واسرافيل عليه السلام اما جبريل فموكل بالوحى والبطش وهزم الجيوش واما ميكائيل عليه السلام فموكل بالمطر والنبات والارزاق واما ملك الموت فموكل بقبض الانفس واما اسرافيل فهو صاحب الصور.
অর্থ: “(কার্য নির্বাহকারী) হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, উনারা হলেন হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালামগণ! ….  হযরত আব্দুর রহমান ইবনে সাবিত্ব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বলেন, চারজন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা জগতের কার্য নির্বাহ করে থাকেন। হযরত জিব্রাঈল, আলাইহিস সালাম, হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম, হযরত মালাকুল মউত আলাইহিস সালাম, ও হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম। হযরত জিররাঈল আলাইহিস সালাম তিনি ওহী, বাতাস ও সৈন্য পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত। হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বৃষ্টি, ফসল ও রিযিকের দায়িত্বে নিয়োজিত। হযরত মালাকুল মউত আযরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি রূহ কবয করার দায়িত্বে নিয়োজিত। আর হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি শিঙ্গায় ‘ফু’ দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত।” কোন কোন তাফসীরে উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় বিশেষ বিশেষ ওলীগণের হাতে জগতের বিশেষ বিশেষ কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত করার কথাও উল্লেখ আছে।” এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে যে,
قال حضرت الامام احمد بن حنبل رحمة الله عليه فى مسنده ذكر اهل الشام عند على بن ابى طالب عليه السلام وهو بالعراق فقالوا العنهم يا امير الـمؤمنين قال لا سـمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول الابدال بالشام وهم اربعون رجلا كلما مات رجل ابدل الله مكانه رجلا يسقى بـهم الغيث وينتصربـهم على الاعداء ويصرف عن اهل الشام بهم العذاب.
অর্থ: “হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মসনদে আহমদ’-এ উল্লেখ করেন। হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি যখন ইরাকে অবস্থান করছিলেন তখন উনার সম্মুখে শামবাসীদের সম্পর্কে আলোচনা হচ্ছিল। লোকজন বললো, হে আমীরুল মু’মিনীন! শামবাসীদের উপর বদদোয়া করুন। হযরত আলী আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, না। কারণ আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘আবদালগণ উনারা শামদেশেই থাকেন, উনারা সংখ্যায় চল্লিশজন। যখন উনাদের মধ্যে একজন ইন্তিকাল করেন তখন আরেকজন দিয়ে সে স্থান পূর্ণ করা হয়। উনাদের মাধ্যমে শামবাসী বৃষ্টি পেয়ে থাকে, শত্রুর উপর বিজয়ী হওয়ার জন্যে সাহায্য পেয়ে থাকে এবং উনাদের মাধ্যমে তারা আযাব-গযব থেকে বেঁচে থাকে।”
হাদীছ শরীফ-এ এ সম্পর্কে আরো ইরশাদ  হয়েছে,
قال الطبرانى فى الكبير عن عبادة بن الصامت قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يزال الابدال فى امتى ثلاثون بـهم تقوم الارض وبـهم تـمطرون وبـهم تنصرون.
অর্থ: “ইমাম তিবরানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “কবীর” কিতাবে উল্লেখ করেন। উবাদা ইবনে ছামেত রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে ত্রিশজন আবদাল সর্বদাই থাকবেন। উনাদের মাধ্যমেই জমিন কায়িম থাকবে, উনাদের মাধ্যমে মানুষ বৃষ্টি পাবে এবং উনাদের মাধ্যমে মানুষ সাহায্য প্রাপ্ত হবে।”
আরো বর্ণিত আছে যে, হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
لا يزال اربعون رجلا يحفظ الله بهم الارض
অর্থঃ “পৃথিবীতে এরূপ চল্লিশজন ব্যক্তি (ওলী) সর্বদাই থাকবেন। যাঁদের মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি যমিনকে হিফাযত করবেন।” (হিলইয়াতুল আউলিয়া)
অন্যত্র মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এরূপ ওলীগণ উনাদের কথা উল্লেখ করার পর তিনি বলেন,
فيهم يـحيى ويـميت ويـمطر وينبت ويدفع االبلاء
অর্থাৎ “উনাদের মাধ্যমেই মানুষ বেঁচে থাকবে, মারা যাবে, বৃষ্টি পাবে, ফসল পাবে এবং বালা-মুছীবত দূর হবে।” (হিলইয়াতুল আউলিয়া)
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ আরো উল্লেখ আছে যে, হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন-
ثلاث من الابدال الذين بـهم قوام الدنيا
অর্থাৎ “আবদালগণ উনাদের মধ্যে এমন তিনজন রয়েছেন যাঁদের মাধ্যমে দুনিয়া কায়িম থাকবে।” (হিলইয়াতুল আউলিয়া)
হযরত ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
لن تـخلو الارض من اربعين بـهم يغاث الناس وبـهم ينصرون وبـهم يرزقون
অর্থাৎ এরূপ চল্লিশজন লোক থেকে জমিন কখনো খালী থাকবেনা, উনাদের মাধ্যমে মানুষ বৃষ্টি পাবে, সাহায্যপ্রাপ্ত হবে এবং রিযিকপ্রাপ্ত হবে। (হিলইয়াতুল আউলিয়া)
এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ আছে যে-
وسبعة فى سائر الامصار بـهم تسقون الغيث وبـهم تنصرون على العدو وبـهم يقيم الله امر الدنيا.
অর্থাৎ “সমস্ত শহরেই সাতজন এরূপ ওলী থাকেন উনাদের মাধ্যমে মানুষ বৃষ্টি লাভ করে; শত্রুর বিরুদ্ধে সাহায্যপ্রাপ্ত হয় এবং উনাদের মাধ্যমেই মহান আল্লাহ পাক তিনি জগতের কার্যসমূহ সম্পাদন করেন। অর্থাৎ জগত পরিচালনা করেন।” (হিলইয়াতুল আউলিয়া)
স্মর্তব্য যে, জগতখ্যাত  আলিমে দ্বীন, সুলতানুল আরিফীন, মুজাদ্দিদুয্ যামান, ইমামুল মুহাদ্দিছীন, তাজুল মুফাসসিরীন, হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য কিতাব “আল হাবী লিল ফতওয়া”তে উল্লিখিত হাদীছ শরীফসমূহ উল্লেখ করতঃ এটাই প্রমাণ করেছেন যে, জগতে অসংখ্য গাউছ, কুতুব, আবদাল, আওতাদ, নক্বীব, নুজাবা, আখইয়ার তথা আউলিয়ায়ে কিরাম আছেন, এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত থাকবেন, উনাদের মাধ্যমেই মহান আল্লাহ পাক তিনি জগত পরিচালনা করে থাকেন। কেননা উল্লিখিত হাদীছ শরীফ সমূহে এ বিষয়গুলো স্পষ্টভাবেই উল্লেখ আছে যে,
(১) بـهم يغاث الناس – উনাদের মাধ্যমে মানুষ সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।
(২) تنصرون على العدو – শত্রুর উপর বিজয়ী হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য প্রাপ্ত হবে।
(৩) يدفع البلاء والعذاب- উনাদের ওসীলায় বালা-মুছিবত, আযাব-গযব দূর হবে।
(৪) يحيى ويميت – বেঁচে থাকবে এবং মৃত্যু হবে।
(৫) ينبت ويرزقون- ফসল পাবে এবং রিযিক পাবে।
(৬) يحفظ الارض  – জমিন হিফাযত থাকবে।
(৭) تقوم الارض – জমিন কায়িম থাকবে।
(৮) قوام الدنيا – দুনিয়া কায়িম থাকবে।
(৯) يقيم امر الدنيا- জগতের কার্যাবলী সম্পাদিত হবে।
যদ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের হাতে জগত পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি ওলীগণ উনাদের মাধ্যমে জগত পরিচালনা করে থাকেন। ওলীগণ উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার খলীফা বা প্রতিনিধি হিসেবেই জগতের কার্যসমূহ সম্পাদন করে থাকেন। অতএব, যাঁদের মাধ্যমে জগত কায়িম থাকে উনারাই হচ্ছেন ‘ক্বাইয়্যূমুদ্ দুনিয়া’ বা “ক্বাইয়্যূমুয্ যামান”। সুতরাং এ অর্থে এবং উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ সমূহের দৃষ্টিতে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি মাখলুকের  ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
অতএব, উপরোক্ত বিস্তারিত ও দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, “কোন মাখলূকাতের হাতে জগত পরিচালনার ক্ষমতা নেই” কাযযাবুদ্দীনের এ বক্তব্য সম্পূর্ণই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ। সাথে সাথে কুরআন শরীফ-এর আয়াত ও অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ অস্বীকার করার নামান্তর। যা কাট্টা কুফরীর পর্যায়ভুক্ত।
উল্লেখ্য কাযযাবুদ্দীনের আরেকটি প্রতারণামূলক ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য হলো সে লিখেছে, “তারা এই খেতাব ব্যবহার করে থাকলেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রূপক অর্থেই ব্যবহার করে থাকবেন। কিন্তু রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ও উনার অনুসারীগণ তো প্রকৃত অর্থেই ব্যবহার করেছেন। তার প্রমাণ হলো উনার পত্রিকায় গাউছুল আ’যম বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে বলা হয়েছে, গাউছূল আ’যম সাইয়্যিদুল আউলিয়া মুহিউদ্দীন বড়পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন “কোন চাঁদ উদিত হয়না কোন সূর্য অস্ত যায়না আমার অনুমতি ব্যতীত” …. অতঃপর একটু সামনে গিয়ে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিও এরূপ ক্ষমতা রাখেন সেদিকে ইঙ্গিত করে পত্রিকাটিতে লিখা হয়েছে, “উল্লেখ্য এ ধরনের আখাসসুল খাছ মর্যাদা-মর্তবার ওলী আল্লাহর ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সমাসীন ……… রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। (আল বাইয়্যিনাত ৭১তম সংখ্যা ১৩৯ পৃষ্ঠা) এভাবে বুঝানো হয়েছে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সত্যিকার অর্থেই ‘কাইয়্যূমুয্ যামান’।”
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীনের উপরোক্ত বক্তব্যের জবাবে বলতে হয় যে, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ যাঁরা “ক্বাইয়্যূম” উপাধি ব্যবহার করেছেন উনারা রূপক অর্থে ব্যবহার করেছেন, এর সরাসরি কোন দলীল প্রমাণ কাযযাবুদ্দীনের কাছে না থাকার পরও কাযযাবুদ্দীন মানতে বাধ্য হয়েছে যে, উনারা রূপক অর্থেই ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন। অথচ রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যে রূপক অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেন তার প্রমাণ উনার ওয়াজ শরীফ ও মাসিক আল বাইয়্যিনাতেই  রয়েছে। যেমন এ প্রসঙ্গে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে উল্লেখ আছে,  “…………..” ক্বাইউমুয্ যামানঃ অনেকে এ লক্ববের সরাসরি শাব্দিক অর্থ  গ্রহণ করে বলে যে, এর অর্থ হলো- যামানার রক্ষক, যা মহান আল্লাহ পাক উনার শান। কাজেই উহা ব্যবহার করা নাজায়িয। মূলতঃ ইসলামে তথা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসে এরূপ শত-সহস্র শব্দ রয়েছে, যার সরাসরি শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করা হয়না। বরং অবস্থা বিশেষে ঘুরিয়ে অর্থ করতে হয়। যেমন- “ছলাত” শব্দের অর্থ- নামায, দরূদ, রহমত, ক্ষমা ও তাসবীহ্ ইত্যাদি। অনুরূপ “ক্বাইউমুয্ যামান”-এর অর্থও ঘুরিয়ে করতে হবে। এর অর্থ হবে- যাঁদের উছীলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি যামানাকে রক্ষা করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম “ক্বাইউমুয্ যামান” লক্বব প্রদান করেন আফদ্বালুল আউলিয়া, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে। অতঃপর উনার ছেলে হযরত ইমাম মাছুম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে “ক্বাইউমে ছানী”, উনার ছেলে হযরতুল আল্লামা হুজ্জাতুল্লাহ্ নক্শবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে “ক্বাইউমে ছালেছ”, উনার ছেলে হযরত আবুল উলা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও উনার ছেলে হযরত জোবায়ের রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে “ক্বাইউমে রাবে বা চতুর্থ ক্বাইউম” লক্বব প্রদান করেন। আর হযরত শাহ্ ওয়ালীউল্লাহ্ মুহাদ্দিছে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ বকর সিদ্দিকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আব্দুল হাই সিদ্দিকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারাও ছিলেন “ক্বাইউমুয্ যামান”। (মাকতুবাত শরীফ, হালাতে মাশায়িখে নক্শবন্দ, শাহ ওলীউল্লাহর সমকালীন রাজনীতি)
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও অন্যান্য ওলীআল্লাহগণ উনারা যেরূপ রূপক অর্থেই ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন, তদ্রুপ রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম ও উনার মুরীদগণও রূপক অর্থেই ‘ক্বাইয়্যূম’ লক্বব ব্যবহার ও গ্রহণ করে থাকেন। স্মর্তব্য যে, কাযযাবুদ্দীন “রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম সত্যিকার অর্থেই ক্বাইয়্যূম উপাধি ব্যবহার করেন” একথা প্রমাণ করতে গিয়ে আল বাইয়্যিনাত-এর ৭১তম সংখ্যা থেকে যে বক্তব্য উল্লেখ করেছে সেখানেও সে জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। এর খণ্ডনমূলক আলোচনা করলেই বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে।
প্রথমতঃ রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি “সত্যিকার অর্থেই কাইয়্যূম উপাধি ব্যবহার করেন” একথার প্রমাণ স্বরূপ কাযযাবুদ্দীন আল বাইয়্যিনাত-এর উক্ত বক্তব্যকে উল্লেখ করেছে। অথচ তার উল্লিখিত উক্ত বক্তব্যে তো দূরের কথা, ৭১তম সংখ্যার ১৭৩ পৃষ্ঠার কোথাও ‘ক্বাইয়্যূমুয্ যামান’ উপাধি সম্পর্কিত কোন আলোচনাই নেই। তাহলে উক্ত বক্তব্য কি করে একথার প্রমাণ হতে পারে যে, তিনি সত্যিকার অর্থেই ‘কাইউম’ উপাধি ব্যবহার করেন। কাজেই প্রমাণিত হলো যে, এ ক্ষেত্রে উক্ত বক্তব্য উল্লেখ্য করা জিহালত ও প্রতারণা বৈ কিছুই নয়।
দ্বিতীয়তঃ কাযযাবুদ্দীন ৭১তম সংখ্যার বক্তব্যটি পরিপূর্ণ ও হুবহু উল্লেখ করেনি। বরং নিজের মিথ্যা দাবিকে ছাবেত করার লক্ষ্যে আল বাইয়্যিনাতের বক্তব্যকে কাটছাঁট করে অর্থাৎ আগে পিছের বক্তব্য বাদ দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে একাধিক বক্তব্য নিয়ে একত্রিত করে সেটাকেই আল বাইয়্যিনাতের বক্তব্য বলে চালিয়ে দিয়েছে। অবশ্য তার এ কাটছাঁটকৃত জালিয়াতিপূর্ণ বক্তব্য দ্বারাও তার দাবি সত্য বলে প্রমাণিত হয় না। সুতরাং তার দাবি যে সম্পূর্ণই মিথ্যা, সে যে আল বাইয়্যিনাতের বক্তব্য কাটছাঁট করেছে এবং উক্ত বক্তব্যে যে, “ক্বাইয়্যূম” উপাধি সম্পর্কিত কোন আলোচনা নেই, তা ৭১তম সংখ্যার বক্তব্যটি হুবহু নিম্নে তুলে ধরলেই সুস্পষ্ট হয়ে যাবে। আল বাইয়্যিনাত-এর ৭১তম সংখ্যার ১৩৯ পৃষ্ঠার বক্তব্যটি হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলো-
“আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ইতিহাসে হযরত ইউসুফ ইবনে হুসাইন রয়ী একটি অনবদ্য নাম। তিনি যখন মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে মক্ববুল হলেন তখন গায়েবী নেদা হল, প্রত্যেক যামানায় আল্লাহ পাক উনার একজন নিশান বরদার ওলীআল্লাহ থাকেন, এ যামানায় আল্লাহ পাক উনার যিনি নিশান-বরদার ওলীআল্লাহ তথা যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ তিনি হযরত যুন্নুন মিসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। আপনি উনার ছোহ্বতে যান।
নিশান-বরদার ওলীআল্লাহ তথা যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ উনার মর্যাদা-মর্তবা বেমেছাল। সমুদ্রের মাছ, গর্তের পিপীলিকা, আকাশ-বাতাস, তরুলতা, কায়েনাত সবকিছুই উনার জন্য দোয়া করতে থাকে। গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, মুহিউদ্দীন, বড় পীর ছাহেব হযরত আব্দুল ক্বাদীর জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, কোন চাঁদ উদিত হয়না, কোন সূর্য অস্ত যায়না আমার অনুমতি ব্যতীত। এতো গেল কায়েনাত চলার ক্ষেত্রে উদাহরণ। আর আল্লাহ পাক উনার কাছে মক্ববুল বান্দা হওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের ওলী আল্লাহ উনার অনুমোদন লাভ তথা নেক দৃষ্টি লাভের প্রয়োজনীয়তা ততোধিকভাবে প্রযোজ্য।
উল্লেখ্য, যার উপর উনাদের এ নেকদৃষ্টি যতক্ষণ থাকে, তিনি ততক্ষণ বহাল তবিয়তে থাকেন। যখন তার ব্যত্যয় ঘটে তখন অনিবার্যভাবে বিচ্যুতি আসে।
মূলতঃ এ ধরনের আখাছছুল খাছ ওলীআল্লাহগণ উনারা হলেন অপরাপর ব্যক্তির ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির পথে যাচাইয়ের এক কষ্টিপাথর।
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি হক্ব-নাহক্ব পার্থক্য করা ব্যতীত ছাড়বোনা। যাঁরা হক্ব তারা এই শ্রেণীর ওলীআল্লাহ উনার মুহব্বত লাভে ধন্য হন। আর যারা নাহক্ব তারা তা থেকে বঞ্চিত হয়। এজন্য এ ধরনের এক ওলীআল্লাহ তিনি বলেছিলেন, “আয় আল্লাহ পাক, আপনি যাকে অপছন্দ করেন, আমার বিরোধিতায় তাকে লাগিয়ে দিন। অতঃপর তাকে হালাক করে দিন।”
হাদীছে কুদসী শরীফ-এ এর সমর্থনে বলা হয়েছে, “যে আমার ওলী উনার প্রতি বিরোধীতা পোষণ করে আমি তার প্রতি জিহাদ ঘোষণা করি।” যে কারণে আমরা দেখি সাইয়্যিদুল আউলিয়া, মাহ্বুবে সুবহানী, গাউছুল আ’যম, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যামানায়, আফদ্বালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যামানায় অনেক বড় বড় নামধারী, আলিম আল্লাহ পাক উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তথাকথিত আশিক দাবিদার উনাদের প্রতি শেষ পর্যন্ত সুধারণা রাখতে ব্যর্থ হয়ে অতঃপর হালাকীতে পর্যবসিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ধরনের আখাছছুল খাছ মর্যাদা-মর্তবার ওলী আল্লাহ উনার ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সমাসীন ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যে বেমেছাল তাজদীদ করছেন, প্রায় অবলুপ্ত সুন্নতের যে পুনরুজ্জীবন দান করছেন, মানুষের মাঝে ফয়েজ-তায়াজ্জুহর যে ব্যাপক বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন তাতে উনার প্রতি সমর্থন অক্ষুন্ন রাখা তার পক্ষেই সম্ভব যে আল্লাহ পাক উনার কাছে মক্ববুল। …..।” (আল বাইয়্যিনাত ৭১তম সংখ্যা, ১৩৯ পৃষ্ঠা)
এবার আপনারাই বলুন! আল বাইয়্যিনাতের উক্ত বক্তব্যের কোথাও ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি সম্পর্কিত কোন আলোচনা আছে কিনা? নাই। আর বড় পীর ছাহেব তিনি বলেছেন “চন্দ্র সূর্য উদিত হয়না ….. ।” এ বক্তব্যের সাথে “এ ধরনের আখাছছুল খাছ মর্যাদা-মর্তবা …..।” এ বক্তব্যের কোন মিল রয়েছে কি? নাই। কারণ দুটি বক্তব্য দু’স্থানের এর আগে পরে আরো বহু বক্তব্য রয়ে গেছে। যে বক্তব্যগুলো প্রমাণ করে যে, উপরের বক্তব্যের সাথে নিচের বক্তব্যের কোনই সম্পর্ক নেই। উপরের বক্তব্য দ্বারা হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মর্যাদাকে বুঝানো হয়েছে যে, যারা আখাছছুল খাছ ওলী উনাদের বিরোধিতা যদি ফাসিক ফুজ্জাররা করে তারা হালাক বা ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি হক্ব পন্থি কেউ ভুলবশতঃ বিরোধিতা করে তবে একদিন সে ভুল বুঝতে পেরে অবশ্যই বিরোধিতা থেকে ফিরে আসবে। যেমন, উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়েছে, হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রথম দিকে বিরোধিতা করলেও পরবর্তীতে তওবা করে বিরোধিতা থেকে ফিরে আসেন। এ বিষয়টাই মূলতঃ লিখক উনার উক্ত বক্তব্যে ফুটিয়ে তুলেছেন। এর সাথে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধির কোনই সম্পর্ক নেই।
অতএব, কাযযাবুদ্দীন যে, জাহিল প্রতারক ও বক্তব্য কাটছাঁটকারী তথা ইবারত চোর তা সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো।
তৃতীয়তঃ “চন্দ্র-সূর্য কারো অনুমতিতে উদিত বা অস্ত যাওয়ার সাথে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধির কোন সম্পর্ক নেই” একথা যেরূপ সত্য “অনুরূপ দাবি করাতে যে, আল্লাহ দাবি করা হয়না এটাও সত্য।” কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিসমূহ যে ওলীগণ উনাদের হুকুম বা উনাদের আদেশ-নিষেধ মেনে থাকে তার বহু প্রমাণ রয়েছে। আর জগত পরিচালনার ক্ষমতা যে মাখলূকের হাতে রয়েছে তাও কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে। কাজেই এক্ষেত্রে আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ক্ষমতা ও মর্যাদার কারণে যদি চন্দ্র-সূর্য বা অন্য কিছু গাউছ, কুতুব, আবদাল বা ওলীগণ উনাদের অনুমতি তলব করে তাতে দোষের কি? এতে কি করে আল্লাহ দাবি করা হয়? যদি এতে আল্লাহ দাবি করা হতো তবে গাউছুল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কোন দিনও একথা বলতেন না। তিনি যে একথা বলেছেন তার প্রমাণ উনার কিতাবেই রয়েছে। যদিও কাযযাবুদ্দীন জিহালতীর কারণে উক্ত বক্তব্যকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে। মূলতঃ যারা বকদরে নিছাব, ইলম নিয়ে লাফালাফি করে তারা সত্যকে মিথ্যা বলে সাব্যস্ত করবে এটাই তো স্বাভাবিক।
ইমামুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত হযরত বড় পীর ছাহেব উনার বিখ্যাত জীবনী গ্রন্থ “বাহযাতুল আসরার”-এর সংক্ষিপ্তসার “জুবদাতুল আছার”-এর ৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
شیخ ابو القاسم عمر بن مسعود بزاز اور شیخ ابو حفص عمر یکمانی رحمہ اللہ تعالی روایت کرتے ہیں کہ ایک دفعہ شیخ سیدنا عبد القادر جیلانی رحمۃ اللہ علیہ بادلوں میں سیر کرتھے اور اپ تمام اھل مجلس کے سروں پرتھے تو اپ نے فرمایا جب تک افتاب مجھے سلام نہ کرے طلوع نھیں ھوتا بر سال اینے اغاز سے پھلے میرے پاس اتاھے اور مجھے اہم واقعات سے اگاہ کرتا ہے اسی طرح ماہ وہفتہ میرے پاس اگر سلام گہتے ہیں اور اپنے دوران جو چیزیں رونما ہونے والی ہوتی ہیں مجھے اگاہ کرتے.
অর্থ: “শায়খ আবুল কাসেম ওমর বিন মাসঊদ বায্যায এবং শায়খ আবূল হাফছ উমর রহমতুল্লাহি আলাইহিমা উনারা বর্ণনা করেন, একবার শায়খ সাইয়্যিদ আবদুল ক্বাদির জীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মজলিসে সমবেত লোকদের মাথার উপর মেঘমালায় পরিভ্রমণরত ছিলেন। তিনি বলেন, সূর্য যতক্ষণ আমাকে সালাম না দেয় (অর্থাৎ আমার থেকে অনুমতি না নেয়) ততক্ষণ উদিত হয়না। প্রতিটি নতুন বছর শুরুর আগে আমার কাছে আসে এবং ঘটমান গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ সম্পর্কে আমাকে অবহিত করে। অনুরূপ মাস ও সপ্তাহ আমার কাছে এসে আমাকে সালাম দেয় এবং স্বীয় কালে ঘটমান ঘটনাবলী সম্পর্কে আমাকে অবহিত করে।”
কাযযাবুদ্দীন কি এখন বলবে যে, হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত বড়পীর ছাহেব উনার সম্পর্কে অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি করে প্রশংসা করেছেন এবং নিজের বুযূর্গী জাহির করেছেন? যা হোক এ বিষয়ে পরে আলোচনা হবে এবার মূল বিষয়ে আসি।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমাণিত হয় যে, শুধু সূর্য নয় মাস ও সপ্তাহও হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুমতি নিয়ে উদিত হত বা শুরু হতো।
এখন কাযযাবুদ্দীন হয়তো বলতে পারে যে, উক্ত বর্ণনায় সূর্যের কথা উল্লেখ আছে চন্দ্রের কথা উল্লেখ নেই এবং সালাম দেয়ার কথা উল্লেখ আছে, অনুমতির কথা উল্লেখ নেই। এর জবাব হলো চন্দ্র সূর্যেরই তাবে’ সূর্যের কথা বললে চন্দ্রও এর মধ্যে এসে যায়। তাছাড়া মাস উপস্থিত হওয়ার অর্থও চাঁদ উপস্থিত হওয়া। কারণ আরবী মাসগুলোর সম্পর্ক চাঁদের সাথেই। আর যদিও উক্ত বক্তব্যে সালামের কথা উল্লেখ আছে অনুমতির কথা উল্লেখ নেই। তবে সালাম অনুমতিরই একটি পদ্ধতি। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এ কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে সালাম দিয়ে অনুমতি নেয়ার কথা বলা হয়েছে। কাজেই সালাম অনুমতিরই অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ সালাম দেয়া আর অনুমতি নেয়া একই কথা।
এখন কাযযাবুদ্দীন কি বলবে যে, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ‘আল্লাহ দাবি’ করেছেন। কাজেই তিনি কাফির। নাঊযুবিল্লাহ! মূলতঃ কাযযাবুদ্দীনের ন্যায় জাহিলদের পক্ষে এরূপ বলাটা অস্বাভাবিক নয়। সে যদি গাউছুল আ’যম বড় পীর  ছাহেব  রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবনী মুবারক দু’এক পৃষ্ঠাও পড়তো তবে এরূপ মন্তব্য করতোনা।
শায়খ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “যুবদাতুল আছার”-এ গাউছুল আ’যম বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে আরো উল্লেখ করেন যে,
شیخ عقیل منجی کے سامنے جناب شیخ عبد القادر کے متعلق یہ بیان کیا گیا کہ ایک نوجوان ولی اللہ بغداد میں ظاھر ہواھے تو اپنے فرمایا اسکا حکم تو اسمانوں پربھی چلتاھے وہ برا رفیع الشان نوجوان ہے.
অর্থ: “হযরত শায়খ আকীল মুনজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে যখন হযরত শায়খ আবদুল ক্বাদির জীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কথা উঠে এবং বলা হয় যে, বাগদাদ শরীফ-এ একজন নওযোয়ান ওলী আত্মপ্রকাশ করেছেন, তখন তিনি বলেন যে, উনার অর্থাৎ গাউছূল আ’যম উনার হুকুমতো আসমান সমূহের উপরও চলে। তিনি উচ্চ মর্যাদাশীল মস্তবড় ওলী।” (যুবদাতুল আছার ৩৮ পৃষ্ঠা)
ابو سعید قیلوی سے قطب وقت کے اوصاف دریفت کئے گئے تو اپ نے فرمایا کہ قطب تمامن امور وقت کو اپنے قبضہ میں رکھتا ہے اور گون نے پوچھا پھر ایسا قطب وقت اپ کس نظروں میں کون ہے؟ اپ نے فرمایا شیخ سید عبد القادر جیلانی رحمۃ اللہ ھی ایسی شخصیت ہیں.
অর্থ: হযরত শায়খ আবূ সাঈদ কাইলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট “কুতুবে ওয়াক্ত”-এর গুণাবলী সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে, তিনি বলেন, একজন “কুতুব” উনার যুগের সমস্ত কার্যাবলী স্বীয় কবজায় রাখেন অর্থাৎ সৃষ্টি জগতের সমস্ত কাজের অধিকার বা ক্ষমতা উনার হাতে অপর্ণ বা ন্যস্ত করা হয়। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, “আপনার দৃষ্টিতে বর্তমান যুগে এ রকম ‘কুতুব’ কে?” তিনি বললেন, “শায়খ সাইয়্যিদ আব্দুল ক্বাদির জীলানী (রহমতুল্লাহি আলাইহি) তিনি হচ্ছেন এরূপ ব্যক্তি।” অর্থাৎ জগতের সমস্ত কাজ সম্পাদনের দায়িত্বই উনার হাতে ন্যস্ত ছিল বা জগতের সবকিছুই উনার অধীন ছিল। (যুবদাতুল আছার/৩৮)
এতো গেল গাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্ষমতার কথা। বস্তুত অন্যান্য আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের জীবনীতেও এরূপ বহু ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। যদ্বারা প্রমাণিত হয় যে, মাখলূক তথা চন্দ্র, সূর্য রূহ ইত্যাদি ওলীগণ উনাদের নির্দেশ পালন করে থাকে।
যেমন এ প্রসঙ্গে ‘তাযকিরাতুল আউলিয়া’ গ্রন্থে উল্লেখ আছে, হযরতুল আল্লামা মাওলানা জালালুদ্দীন রুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পীর ছাহেব, হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইন্তিকালের পূর্বে আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ইলহাম প্রাপ্ত হয়ে রোম দেশের দিকে রওয়ানা করেন, মহান আল্লাহ পাক প্রদত্ত নিয়ামত আল্লামা রুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে প্রদান করার জন্য। পথিমধ্যে এক জঙ্গলের পার্শ্বে দেখতে পেলেন যে, এক বৃদ্ধা মহিলা সম্মুখে একটি মৃত যুবক ছেলেকে নিয়ে খুব কান্নাকাটি করছে। তখন হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বৃদ্ধা মহিলাকে তার ক্রন্দনের কারণ জিজ্ঞাসা করায় মহিলা বলল, “হুযূর! এ যুবক আমার একমাত্র নাতি। আমার জীবিকা একমাত্র সেই নির্বাহ করত। সে ব্যতীত আমার কেউই নেই। যার কারণে তার মৃত্যুশোকে আমি আল্লাহ পাক উনার দরবারে ক্রন্দন করছি, যাতে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে কোন ব্যবস্থা করে দেন।” বৃদ্ধা মহিলার হৃদয় বিদারক কথাগুলো শুনে হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ব্যথিত হয়ে বললেন, “হে বালক! তুমি যিন্দা হয়ে যাও।” একথা বলার সাথে সাথে মৃত বালকটি যিন্দা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। পরে উক্ত বৃদ্ধা মহিলা ও যুবক ছেলেটি হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জন্য দোয়া করে চলে গেল। পরের দিন এ ঘটনা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল যে, অমুক জঙ্গলের মধ্যে এক দরবেশের হুকুমে এক মৃত ছেলে জীবিত হয়েছে।
সেই এলাকার বাদশাহ্ এরূপ ঘটনা শুনে উক্ত দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে তার রাজ দরবারে উপস্থিত করার জন্য লোকজনকে নির্দেশ দিল। হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাদশাহর এরূপ ফরমান শ্রবণ করে নিজেই যথাসময় রাজ দরবারে হাজির হলেন। বাদশাহ্ হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে চিনতে না পেরে ও উনার মর্যাদা না বুঝেই বললো যে, “হে দরবেশ ছাহেব! আপনি কি সেই ছেলেটিকে আপনার হুকুমে জীবিত করেছেন?” উত্তরে হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “আমি এরূপ বলেছি।” তৎশ্রবণে বাদশাহর দরবারি আলিমরা বললো, “তাহলে আপনি শিরক্ করেছেন। কাজেই শরীয়তী ফায়সালা অনুযায়ী আপনার সমস্ত শরীরের চামড়া খুলে ফেলা হবে।” তখন হযরত শামছে তাবরীজী রহ্মতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার নিজ হাতেই পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল থেকে শুরু করে সমস্ত শরীরের চামড়া খুলে বাদশাহর সামনে রেখে চলে গেলেন। পরের দিন সকালে যখন সূর্য উঠলো, তখন উনার শরীর মুবারকে চামড়া না থাকায় সূর্যের আলোতে কষ্ট হওয়ার কারণে তিনি সূর্যকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে সূর্য! তুমি আমাকে কষ্ট দিওনা।” একথা বলার সাথে সাথেই উদিত হওয়া সূর্য তৎক্ষনাৎ ডুবে গেল এবং চতুর্দিক অন্ধকার হয়ে গেল। এলাকার সমস্ত লোক ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গেল। চতুর্দিকে হাহাকার শব্দ হতে লাগলো। বাদশাহ্ ও তার লোকজন বুঝতে পারলো যে, নিশ্চিত সেই দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বড় বুযূর্গ ও ওলীআল্লাহ হবেন এবং উনার সাথে আমাদের বেয়াদবী হওয়ার কারণেই আমরা এরূপ মুছীবতে পড়েছি। তখন বাদশাহ্ তার লোকজনসহ হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে গিয়ে উনার হাত মুবারক ধরে ক্ষমা চাইল এবং সূর্যকে আবার যথাস্থানে উঠিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করলো। হযরত শামছে তাবরীজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সূর্যকে বললেন, “হে সূর্য! আমি বলেছি যে, তুমি আমাকে কষ্ট দিওনা। কিন্তু তুমি কেন সমস্ত লোককে কষ্ট দিচ্ছ?” একথা বলার সাথে সাথে পুনরায় সূর্য যথাস্থানে উঠে গেল; কিন্তু উনার শরীর মুবারকে রোদের তাপ লাগলো না।” (সুবহানাল্লাহ্)
আরেকটি ঘটনা কাযযাবুদ্দীন নিজেই তার “ভ্রান্ত মতবাদে” উল্লেখ করেছে যেমন সে লিখেছে, “১. হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে একজন লোক দশ বছর পর্যন্ত ছিলেন। এই দশ বছরের মধ্যে উক্ত লোকটি হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে অলৌকিক কিছু ঘটতে দেখেননি। একদিন তিনি মনে মনে ভাবলেন, এই দশ বছর থাকলাম, অলৌকিক কিছু দেখলাম না। অতএব এখানে থেকে আর কি হবে? আগামী কাল চলে যাব। সকাল বেলায় মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “বল তোমার মনে কি ইচ্ছা জেগেছে?” তিনি বললেন, “হযরত, এতদিন আপনার কাছে থেকে কোনই কারামত দেখলাম না।” তাই আজ আমি চলে যাব বলে ইচ্ছা করেছি। হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, “তোমার কি কারামত আছে?” তিনি বললেন “হুজুর! আমি ধ্যান করে কবরের মধ্যে ঢুকে যেতে পারি এবং মুর্দার সাথে কথা বলে তার খবরাখবর জেনে আসতে পারি।” মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেনঃ তুমি ধ্যান করে কবরের ভিতর ঢুকে যেয়ে তাদের অবস্থা জানবে। আর আমি এখানে বসে ডাক দিলে সেরহিন্দের সব রূহ্ হাজির হয়ে যাবে। …।” (মাজালিসে হাকীমুল উম্মাত)
এখন কাযযাবুদ্দীনের নিকট প্রশ্ন? হযরত শামস তাবরেযী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্দেশে মুর্দা জিন্দা হয়ে গেল, সূর্য অসময়েই অস্ত গেল আবার উদিত হলো। আর কাযযাবুদ্দীন নিজেই স্বীকার করলো যে, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্দেশে সেরহিন্দের সমস্ত রূহ উনার নিকট এসে উপস্থিত হত। এতে কি উনাদের ‘আল্লাহ’ দাবি করা হয়নি? কারণ কাযযাবুদ্দীনের মতে তো এসব ক্ষমতার মালিক কেবল আল্লাহ পাক তিনি! তাহলে ওলীগণ উনারা কি করে এ ক্ষমতার অধিকারী হলেন? তাছাড়া জগতের কোন বস্তু ওলীগণ উনাদের নির্দেশ পালন করলে বা ওলীগণ উনাদের নিকট  অনুমতি তলব করলে যদি আল্লাহ দাবি করা হয়, তবে বলতে হবে যে, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনিও আল্লাহ দাবি করেছেন। নাঊযুবিল্লাহ! কারণ আল্লাহ পাক উনাকে সমস্ত পৃথিবীর কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন। সব কিছুই উনার অনুগত ছিল। সব কিছুই উনার নির্দেশ পালন করতো এবং উনার অনুমতি ও ইচ্ছাক্রমেই পরিচালিত হত। একথা তো সবারই জানা। কাযযাবুদ্দীন এ ক্ষেত্রে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনাকে ‘আল্লাহ’ দাবি করার অপরাধে কাফির ফতওয়া দিবে কি? যদি উনাদের ক্ষেত্রে ‘আল্লাহ’ দাবি করা না হয়, তবে গাউছূল আ’যম উনার ক্ষেত্রে কেন হবে?
অতএব, প্রমাণিত হলো যে, “সূর্য আমার অনুমতি ছাড়া উদিত হয়না” একথার দ্বারা ‘আল্লাহ’ দাবি করা হয়না। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও উনার মুরীদানগণ সত্যিকার অর্থে ক্বাইয়্যূম উপাধি ব্যবহার করেন কাযযাবুদ্দীনের এ দাবি সম্পূর্ণই মিথ্যা।
উপরোক্ত বিস্তারিত ও দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা যে বিষয়গুলো প্রমাণিত হয়েছে তাহলো- (১) ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাড়া অন্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। কারণ এটা আল্লাহ পাক উনার ছিফত। আর আল্লাহ পাক উনার যে কোন ছিফতই বান্দার জন্যে অর্জন করা সম্ভব।
(২) যাদের মাধ্যমে দুনিয়া বা যামানা কায়িম থাকে তারাই হচ্ছেন ক্বাইয়্যূম। এ অর্থে মানুষের ক্ষেত্রেও ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি প্রযোজ্য।
(৩) আমভাবে ক্বাইয়্যূম উপাধি ব্যবহারকে কুফরী বলার অর্থ হলো হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সহ যারাই ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেছেন, উনাদের সকলকে কাফির ফতওয়া দেয়া। যা মূলতঃ নিজেরই কাফির হওয়ার কারণ।
(৪) রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি সত্যিকার অর্থে ‘ক্বাইয়্যূম’ উপাধি ব্যবহার করেন কাযযাবুদ্দীনের এ দাবি সম্পূর্ণই মিথ্যা বানোয়াট ও মনগড়া।
(৫) ওলীগণ উনাদের হাতেও জগত পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত আছে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক তিনি ওলীগণ ও ফেরেশতাগণ উনাদের মাধ্যমে জগত পরিচালনা করে থাকেন। সুতরাং কাযযাবুদ্দীন যে বলেছে, “কোন মাখলূকের হাতে জগত পরিচালনার ক্ষমতা নেই,” তার এ বক্তব্য সম্পূর্ণই কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ বিরোধী।

No comments:

Post a Comment