Monday, February 1, 2016

বাইয়াত এর শাব্দিক বিশ্লেষণ


** “বাইয়াত” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে, “বাইয়ুন” শব্দ থেকে।
** “বাইয়ুন” শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে “ক্রয়-বিক্রয়”
** এখানে এই “ক্রয়-বিক্রয়” মানে হচ্ছে আমার আমিত্বকে আল্লাহর রাহে (ওয়াস্তে) হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  নিকট গিয়ে কোরবান করে দিলাম,বিলীন করে দিলাম,বিক্রি করে দিলাম।

আমার আমিত্ব, আমার যত অহংকার আছে, অহমিকা আছে, আমি আমি যত ভাব আছে সমস্তকিছু আল্লাহর রাসুলের কাছে গিয়ে আল্লাহর রাহে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করে দেয়া, কোরবান করে দেয়া, নিজেকে আল্লাহ্‌ তে সম্পূর্ণ রূপে আল্লাহর কাছে সমর্পন করে দেয়াই হল বাইয়াত ।
অন্য ভাষায় মুরিদ মানে হল বাইয়াত হওয়া।


  •  হে রাসূল! যেসব লোক আপনার নিকট বাইয়াত হচ্ছিল, তারা আসলে আল্লাহর নিকটই বাইয়াত হচ্ছিল। তাদের হাতের উপর আল্লাহর কুদরতের হাত ছিল।হে রাসূল! আল্লাহ মুমিনদের উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন যখন তারা গাছের নীচে আপনার নিকট বাইয়াত হচ্ছিল। (সূরা ফাতহ ১৮)
  •  অপর আয়াতে আল্লাহ বাইয়াত বা প্রতিশুতি বদ্ধ হওয়ার পর তা রক্ষাকারী সম্পর্কে বলেন :-যে ব্যক্তি তার ওয়াদা (প্রতিশ্রুতি) পূর্ণ করবে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করবে, সে আল্লাহ পাকের প্রিয়জন হবে। আর নিশ্চিতভাবে আল্লাহ পাক মুত্তাকীদের ভালবাসেন। (সূরা আলে ইমরান  ৭৬) 
  • সহিহ হাদীসে আছে :- হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন,যে ব্যক্তি বাইয়াতের বন্ধন ছাড়াই মারা গেল সে জাহিলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল। (মুসলিম)
  • অপর হাদিসে আছে :-আব্দুল্লাহ ইবনে দিনার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে বাইয়াত গ্রহণ করতাম, শ্রবণ ও আনুগত্যের উপর এবং তিনি আমাদের সামর্থ্য উক্ত আমল করার অনুমতি দিয়েছেন। (মুসলিম)

ওহাবীরা এগুলো জেনেও সাধারন মুসলমান ভ্রান্ত পথে টানছে গোমরাহী করছে যেমন :-

১) রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হাতে সমস্ত সাহাবীগন বাইয়াত হয়েছেন।

২) রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর ওফাতের পর সমস্ত সাহাবীগন একে একে আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, ওমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ওসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুএই ভাবে সমস্ত সাহাবীগন তাদের যুগের নেতৃস্থানীয় যাকে উত্তম মনে করেছেন সবাই মিলে তার কাছে বাইয়াত হয়েছেন।

৩) অত:পর আহলে বাইয়াতের ইমামগনের নিকট যেমন : ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু , ইমাম হোসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর নিকট মুসলমানগন বাইয়াত হয়েছেন।
ইয়াজিদ (লানতুল্লাহ) তার না-জায়েয ক্ষমতার উপর বাইয়াত হতে জোর জবরদস্তি করলে হক আর বাতিলকে প্রতিষ্টা করার জন্য তার বিরোদ্ধে কারবালায় যুদ্ধ করে ইমাম হোসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শহীদ হযন।

৪) সেই সিলসিলা অনুযায়ী ৪ মাযহাবের ইমামগন হকের উপর মুসলমানদের বাইয়াত করেছেন।

৫) উনাদের পরবর্তীতেও এমন কোন হক পীর-বুজুর্গ বা জ্ঞানী পন্ডিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন না যারা কামেল পীর বা ইমামগনের নিকট বাইয়াত হন নি। এমনকি ওলীকুল সম্রাট গাউসুল আজম পীরানে পীর দস্তাগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও কামেল পীরের নিকট বাইয়াত হয়েছিলেন।

৬) বর্তমানেও সেই সিলসিলা জারি আছে কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। কামেল ব্যক্তির হাতে হাত রেখে ওয়াদা করা ও নিজেকে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুল এর পথে সমার্পিত করা জায়েজ। (কারন কামেল বেক্তি অবশ্যই আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  এর প্রিয়)

★ এজাজতনামা :

এজাজত এর অর্থ অনুমতি , সম্মতি ইত্যাদি এজাজতনামা অর্থঃ অনুমতিপত্র উদাহরনসহ বুঝিয়ে দিলাম এই এজাযতনামা যা রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম 
★ প্রথম সাহাবীদের বাইয়াত করেন যেটি আকাবার শফত নামে আমরা জানি ,

★ পরবতীতে এটি খোলফায়ে রাশেদীন, তবেয়ী (ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি ) তাবে তাবেয়ীন

★ এই ভাবে ওলীগনের বংশগত হক তরিকা অর্থাৎ বাইয়াত করার যোগ্যতা রাখে তাদের মাধ্যমে এই সিলসিলা চলতে থাকে।


No comments:

Post a Comment