Friday, February 22, 2019

দেশের উন্নয়নের জন্য কতিপয় মুবারক দিক নির্দেশনাসমূহ



মহান আল্লাহ পাক তিনি, উনার মহান খলীফা মুজাদ্দিদে আযম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে সারা কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়মত হিসেবে প্রেরন করেছেন। তিনিই দিচ্ছেন কায়িনাতবাসীর প্রতিটি বিষয়ে সঠিক দিক নির্দেশনাসমূহ। উনার মুবারক দিক নির্দেশনা সমূহ অনুসরন-অনুকরন করলেই দোজাহানে সর্বক্ষেত্রে কামিয়াবী থাকবে।


১। আক্বিদা বিশুদ্ধ করা,আমলে ছলেহ করা,ছবর করা ও ইস্তেকামত থাকা:- মহান মুজাদ্দিদে আযম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি উনার মহা মূল্যবান নছিয়ত মুবারকে বলে থাকেন,মুসলমানদেরকে আক্বিদা বিশুদ্ধ করতে হবে ও কাফের-মুশরিকদের প্রবর্তিত সব বদ আমল ও সর্ব প্রকার হারাম-নাজায়িজ কাজ ছেড়ে দিতে হবে।বিদয়াতী আমল ছেড়ে দিতে হবে,বিধর্মীদের সাথে মিল-মুহব্বত রাখা যাবে না,তাদেরকে অনুসরন-অনুকরন করা যাবে না,সর্বাবস্থায় কুরআন শরীফ,হাদীস শরীফ,ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের উপর ইস্তেকামত থাকতে হবে,মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি পরিপূর্ণ তাওয়াক্কুল রাখতে হবে,ছবর করতে হবে,সর্বত্র মীলাদ শরীফ জারি করতে হবে তাহলে মুসলমানদের উপর ও দেশের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ রহমত থাকবে, গায়েবী মদদ থাকবে ও সর্বাবস্থায় কুদরতী ফায়সালা মুবারক হবে। সুবহানাল্লাহ!

২। পরিপূর্ণরুপে যাকাত-উশর ব্যবস্থা কায়িম:- দেশের সর্বত্র যাকাত-উশর ব্যবস্থা কায়িম করতে হবে, যাকাত-উশর ব্যবস্থা কায়িম ব্যতিত অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব নয়। আর অর্থনৈকিত সচ্ছলতা ব্যতিত কোন জাতিই উন্নত হতে পারবে না।সকলেই যাকাত-উশর ঠিকমত আদায় করলে প্রত্যেকেরই মাল-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে ও পবিত্র হবে কাজেই যাকাত-উশর ব্যবস্থা সর্বত্র পরিপূর্ণভাবে কায়িম করতে হবে।

৩। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন:- প্রতিটি জাতির উন্নয়নের জন্য অন্যতম একটা ভিত্তি হচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাইকেই শরিয়ত উনার শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অন্যান্য প্রতিটি পেশার উপরই শিক্ষায় শিক্ষিত করে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।প্রতিটি গৃহে পারিবারিক তালিম,মক্তব প্রতিটি ইউনিয়ন,থানা,জেলায় মাদ্রাসা,স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে ও বাস্তবে শিক্ষার জন্য প্রশিক্ষনকেন্দ্রও স্থাপন করা দরকার।

৪। আইন ব্যবস্থার উন্নয়ন:- আইন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি থাকবে কুরআন শরীফ,হাদীস শরীফ,ইজমা ও ক্বিয়াস। উনাদেরকে মধ্যে প্রতিটি বিষয়ের ফায়সালা দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে সেগুলিই অনুসরন করতে হবে।কাফের-মুশরিকদের কোন আইন-কানুন অনুসরন করা যাবে না।হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অনুসরন করতে হবে।

৫। সামরিক ব্যবস্থার উন্নয়ন:- সেনাবাহিনী,নৌ-বাহিনী,বিমান বাহিনী,আর্মি,পুলিশ,বিডিআরসহ সকলক্ষেত্রে তাদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।দেশের সীমান্তে শক্তিশালী সামরিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।এক্ষেত্রে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অনুরসন করতে হবে।

৬। প্রতিটি জেলায় শহর-বন্দর গড়ে তোলা:- বাংলাদেশে ৬৪টি জেলা রয়েছে কিন্তু প্রতিটি জেলায় তেমন বড় শহর-বন্দর,শিল্প-কারখানা নেই ফলে সবাই ঢাকার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরে,এতে তাদের ব্যয়ও বেশি হচ্ছে ঢাকার উপর চাপও পড়ছে বেশি।এজন্য প্রতিটি জেলায় শহর-বন্দর-শিল্প-কারখানা গড়ে তুললে যার যার জেলায় সে সে কর্মরত থাকলে তার ব্যয়ভার কম হবে ও তাকে দূরে গিয়ে কর্ম করতে হবে না, তার আয়ের তুলনায় ব্যয় কম থাকবে এতে প্রতিটি মানুষ সচ্ছল থাকবে।

৭। ফ্লাইওভার,মেট্রোরেল কোন প্রয়োজন নাই,বরং অপচয়:- দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ফ্লাইওভার,মেট্রোরেল ইত্যাদির কোনো প্রয়োজন নাই,এইগুলি করে শুধু টাকা-পয়সা অপচয় করা হচ্ছে।এইগুলিতে যাটজট কমছে না বরং যানজট ও ভোগান্তি বেড়ে যাচ্ছে।শুধু ঢাকায় এতো লোকের বসবাস না করে প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে দিতে হবে, এতে যানজট কমবে।

৮। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন:- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি রেল ব্যবস্থা ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়ন করার জন্য বিশেষভাবে দিক নির্দেশনা মুবারক করে থাকেন।নৌ পথে ড্রেজিং করলে একদিকে নৌ পরিবরহন চলাচল করা সহজ হবে,অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে বন্যা হবে না,গ্রীস্মকালে পানির সংকট হবে না,ড্রেজিংয়ে যে মাটি উঠে সেটা বিক্রি করলে ড্রেজিং এর খরচ উঠে যাবে। রেল ও নৌ পথে মালামাল পরিবরহনে খরচ কম হবে ফলে একস্থানের মালামাল অন্যস্থানে নিয়ে গেলেও দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতীশীল থাকবে।

৯। প্রতিটি থানায় হিমাগার স্থাপন করা:- সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি প্রতিটি থানায় ১ লাখ টন খাদ্য সংরক্ষনের উপযোগী হিমাগার স্থাপনের বিষয়ে দিক-নির্দেশনা মুবারক দিয়ে থাকেন।পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকার কারণে সংরক্ষনের অভাবে প্রতি বছর অনেক খাদ্যদ্রব্য ও ফল-ফসলাদী নষ্ট হয়।তাই হিমাগার স্থাপন করলে একদিকে খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হবে না অন্যদিকে সারা বছর সকল খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যাবে এবং দামও কম থাকবে।

১০। কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন:- বাংলাদেশের শতকরা ৮০% লোক কৃষির সাথে জড়িত।কৃষকরা যাতে ভালোভাবে চাষাবাদ করতে পারে সেজন্য কৃষকদেরকে ভর্তূকি দিতে হবে ও তাদেরকে ঋণও দিতে হবে।কৃষি কাজের সাথে ব্যবহৃত সকল উপকরনাদীর সহজলভ্যতার ব্যবস্থা করতে হবে।চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য প্রতিটি জেলায় হাসপাতাল ও দক্ষ ডাক্তার নিয়োগ দিতে হবে। এইক্ষেত্রে হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে অনুরসন-অনুসরন করতে হবে।

১১। বাইতুল মাল স্থাপন:- দেশে প্রতিটি জেলায় বাইতুল মাল স্থাপন করে সেখানে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে মাল জমা থাকবে। সেখান থেকে প্রয়োজন মুতাবেক বন্টন করা হবে ও গরীবদেরকে ভ্রাতা দেওয়া দিতে হবে।

১২। কাতিব,কাজী,আমিল নিয়োগ:- দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইনসাফগার কাতিব,কাজী ও আমিল নিয়োগ দেওয়া দরকার।

এছাড়া আরোও আনুসঙ্গিক অনেক বিষয় রয়েছে, মূল কথা হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা আমাদের জন্য অনুসরনীয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে উনাদেরকে অনুসরন-অনুকরন করলে কামিয়াবী থাকবে।

No comments:

Post a Comment