Sunday, January 31, 2016

খাঁটি/কামেল পীরের পরিচয়



খাঁটি পীর বা হেদায়াতের পথ প্রদর্শক হওয়ার জন্য ১০টি শর্ত রয়েছে। যেই পীরের মধ্যে এই ১০টি শর্তের ১টিও পাওয়া যাবেনা, তাহলে বুঝতে হবে সে কখনই আহলে হক হতে পারেনা। তার কাছে গেলে মানুষ কখনই সীরাতে মুস্তাকিমের পথ খুঁজে পাবেনা এবং নিজের আত্মাও পবিত্র হবেনা।

✔ শর্তগুলি হচ্ছে
১। পীর সাহেব তাফসীর, হাদীস, ফিক্হ ও ধর্মীয় যাবতীয় ব্যাপারে অভিজ্ঞ আলিম হওয়া আবশ্যক।

২। পীরের আক্বীদা এবং আমল শরীয়তের মু’আফিক হওয়া অপরিহার্য। তার স্বভাব-চরিত্র ও অন্যান্য গুণাবলী শরীয়ত যে রকম চায়, সে রকম হওয়া বাঞ্ছনীয়।

৩। পীরের মধ্যে লোভ ( টাকা-পয়সা, সম্মান-প্রতিপত্তি, যশঃ ও সুখ্যাতির লিপ্সা) থকবে না। নিজের পক্ষ থেকে কামেল হওয়ার দাবী করবে না। কেননা, এটাও দুনিয়ার মহব্বতেরই অন্তর্ভুক্ত।

৪। তিনি উপর ও নিম্নোল্লেখিত সকল গুনের অধিকারী, এমন একজন কামেল পীরের খিদমতে থেকে ইসলাহে বাতেন (আত্মশুদ্ধি করেছেন) এবং তরীক্বত অর্জন করেছেন, এমন হতে হবে।

৫। সমসাময়িক পরহেযগার-মুত্তাকী আলেমগণ এবং সুন্নত ত্বরীকার ওলীগণ তাঁকে ভালো বলে মনে করতে হবে।

৬। দুনিয়াদার অপেক্ষা দ্বীনদার লোকেরাই তাঁর প্রতি বেশি ভক্তি রাখে, এমন হওয়া আবশ্যক।

৭। তার মুরীদের মধ্যে অধিকাংশ এরকম হতে হবে যে, তারা প্রাণপণে শরীয়তের পাবন্দী করেন এবং দুনিয়ার প্রতি মোহ-লালসা রখেন না।

৮। তিনি এমন হবেন যে, মনোযোগের সাথে মুরীদদের তা’লীম তালকীন করেন এবং অন্তর দিয়ে এটা চান যে, তারা আল্লাহ্ ও রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পায়রবী করুক। মুরীদদের স্বাধীন ভাবে ছেড়ে দেন না এবং তাদের মধ্যে যদি কোন দোষ দেখতে বা শুনতে পান, তবে তা যথারীতি (কাউকে নরমে কাউকে গরমে) সংশোধন করে দেন।

৯। তাঁর ছোহবতে কিছু দিন যাবৎ থাকলে, দুনিয়ার মহব্বত কমে যায় এবং আখেরাতের চিন্তা-ফিকির বাড়তে থাকে, এমন হতে হবে।

১০। তিনি নিজেও রীতিমত যিকির করেন, তিলাওয়াত করেন, সাধারণ সুন্নতও ইচ্ছাকরে বাদ দেন না, অন্ততঃপক্ষে করার পাক্কা ইরাদা রাখেন (কেননা, নিজে আমল না করলে, পাক্কা ইরাদা না থাকলে, তা’লীম-তলকীনে বরকত হয় না) এবং মুরীদদেরকেও এর উপর তাগীদ দিয়ে থাকেন।......... [প্রমাণঃ-কসদুস সাবীল, পৃঃ৯]

আমরা যদি এতগুলো শর্ত স্বরণ রাখতে নাও পারি, তাহলে সহজে হক-বাতিল চিনার আরো একটি উপায় আছে। আর তা হল, যে পীরের কাছে বে-নামাজী গেলে নামাজী হয়, বে-রোজাদার গেলে রোজাদার হয়, বে-পর্দাওয়ালা গেলে পর্দাওয়ালা হয়।

মোট কথাঃ আগে অপরাধ করত, পীরের কাছে যাওয়ার পর আস্তে আস্তে অপরাধ ছেড়ে দেয় এবং যে পীরের মুরীদদের মধ্যে অধিকাংশ মুরীদ নবী স.এর ত্বরীকার উপর চলার প্রাণপণ চেষ্টা করে।

উপরোল্লেখিত শর্তগুলি যাঁদের মধ্যে পাওয়া যাবে, তাঁরা খাঁটি পীর। এমন পীরের কাছে গেলে, আমাদের ঈমান ধ্বংস হবে না, বরং জান্নাতের সঠিক পথ চিনতে পারব, ইনশাআল্লাহ্। আর যারা উল্লেখিত গুণে গুনান্বিতদের বাতিল, ভন্ড, কুফরী আক্বীদা ইত্যাদি বলে গালমন্দ করে, তারা নিজেরাই এই মন্দের অন্তর্ভূক্ত হবে।

No comments:

Post a Comment