Friday, September 29, 2017

রাজারবাগ শরীফ থেকে প্রকাশ্যে বাহাছের চ্যালেঞ্জ

হক্বের বিরোধীতা সৃষ্টির শুরু থেকে কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। আর এটা হচ্ছে একটা স্বাভাবিক নিয়ম। নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রত্যেকেরই বিরোধীতা হয়েছিল। স্বয়ং আখেরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও বিরোধীতা হয়েছে। পরবর্তীতে হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের, ইমাম-মুজতাহিদ এবং আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাহি উনাদের ও বিরোধীতা হয়েছিলো। এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে কিয়ামত অবধি।
একই ধারাবাহিকতায় খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ও বিরোধীতায় লিপ্ত রয়েছে কতিপয় ধর্মব্যবসায়ী, মুনাফিক, গোমরাহ, কাফির-মুশরিকদের উচ্ছিষ্ট ভোগী।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম যমানার লক্ষস্থল ওলী আল্লাহ। সে কারনেই উনি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ ইজমা এবং ক্বিয়াস এর উপর পরিপূর্ন প্রতিষ্ঠিত।
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, হাকিমুল হাদীছ, আওলাদে রসূল, আস সাফফাহ সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনি বেমেছাল বিনয়ের অধিকারী। তাইতো ইতিপূর্বে বহুবার মুবারক আলোচনায় বলেন,”আমাদের কোন আক্বীদা-আ’মল যদি শরীয়তের খিলাফ কেউ প্রমান করতে পারে (কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস দ্বারা), তা অবশ্যই আমরা ছেড়ে দেবো।”
যদি এরা হক্ব চায় এবং এদের এতই হিম্মত থাকে তাহলে গোপনে ষড়যন্ত্র, কুটচাল না করে সামনা সামনি যেন তাদের দাবীগুলো  (কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস দ্বারা) প্রমান করে। যদি তারা বাহাছ গ্রহন না করে  এবং ব্যতীত বিরোধীতায় লিপ্ত থাকে তাহলে তাদের এসকল কর্ম তাদেরকে নমরূদ, ফিরাউন, উবাই বিন সুলুল ইত্যাদির উত্তরসূরি হিসেবে প্রমান করবে।

বাহাছের বিষয় ও শর্তসমূহঃ
১. যারা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায় এবং বাহাছে বসতে চায় তাদেরকে অবশ্যই মুহাক্কিক আলিম হতে হবে। মুহাক্কিক্ব আলিম বলতে- যারা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস সমন্ধে জানেন এবং সে অনুসারে আমল করেন। সুন্নতের পূর্ণপাবন্দ ও খোদাভীতি, পরহেযগারী যাদের রয়েছে তাদেরকে বুঝাবে।
২. উভয়পক্ষের ৫ (পাঁচ) জন আলিম আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। তবে সহকারী হিসেবে সর্বোচ্চ ১২ (বার) জন উপস্থিত থাকতে পারবে।
৩. বাহাছের মানদ- হবে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস।
৪. বিরোধীপক্ষ কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের নির্ভরযোগ্য দলীলের মাধ্যমে প্রমাণ করবে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরের তৈরি নন; বরং মাটির তৈরি। (নাঊযুবিল্লাহ)
৫. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের ভিত্তিতে আরো প্রমাণ করবে যে, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম নাজায়িয, হারাম ও শিরক।
৬. তাদেরকে প্রমাণ করতে হবে যে, ফরয নামাযের পরে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করা বিদয়াত ও হারাম।
৭. আমরা যে পদ্ধতিতে মীলাদ শরীফ পাঠ করি তার মধ্যে কোন বিষয়টি নাজায়িয- তা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে হবে।
৮. তাদেরকে আরো প্রমাণ করতে হবে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ‘ইলমে গাইব’-এর অধিকারী নন।
৯. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের ভিত্তিতে আরো প্রমাণ করবে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত ক্ষমতায় রূহানীভাবে হাযির ও নাযির হতে পারেন না এবং ছিফতীভাবেও সর্বত্র হাযির-নাযির নন।
১০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের মাধ্যমে তাদেরকে আরো প্রমাণ করতে হবে যে, বর্তমান যামানার মহান মুজাদ্দিদ, ইমামুল আইম্মা, মুহইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস ব্যতীত আমল করে থাকেন এবং আরো প্রমাণ করতে হবে যে, উনার কোন লিখনী ও ওয়াজ শরীফ-এ বলা আছে যে, হজ্জকে অস্বীকার করেছেন? যদি উক্ত বিষয়গুলো যথাযথভাবে প্রমাণ করতে না পারে তাহলে অবশ্যই জনসম্মুখে বিরোধী পক্ষ নাহক্ব, মিথ্যাবাদী এবং গুমরাহ বলে নিজেদেরকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং জনসম্মুখে খালিছভাবে তওবা করে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার হাত মুবারকে বাইয়াত হতে হবে।
১১. যারা বাহাছের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায় তাদের আক্বীদা ও আমলের দলীল উক্ত মানদ- সাপেক্ষে পেশ করতে হবে। যেমন ইসলামের নামে ভোট নির্বাচন, গণতন্ত্র, মৌলবাদ দাবী করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, হরতাল, লংমার্চ করা, বেপর্দা হওয়া, ছবি তোলা, যাবতীয় খেলা জায়িয বলা, টিভি দেখা এবং তাদের প্রোগ্রাম করা ইত্যাদি আক্বীদা ও আমলের দলীল পেশ করতে হবে। যদি দলীল পেশ করতে না পারে, তাহলে তারা বিদয়াতী, বাতিল ও গুমরাহ হিসেবে সাব্যস্ত হবে এবং যারা এগুলো সমর্থন করবে তারাও বাতিল বলে গণ্য হবে।
১২. বাহাছ প্রকাশ্য ও সুবিধাজনক স্থানে ব্যাপক প্রচার-প্রসার করে নির্দিষ্ট সময়ে হতে হবে।
১৩. বাহাছের দুই মাস পূর্বেই চুক্তিনামায় আবদ্ধ হতে হবে। অর্থাৎ চুক্তি হওয়ার কমপক্ষে দুই মাস পর বাহাছ অনুষ্ঠিত হবে।
১৪. নিরপেক্ষ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে বাহাছ অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রশাসন বলতে জেলার ডিসি, এসপি, বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি ইত্যাদি নিরাপত্তা পরিষদকে বুঝাবে।
১৫. যারা প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায়, তারাই নিরপেক্ষ প্রশাসনের তরফ থেকে নিরাপত্তার জন্য লিখিত অনুমতি নিবে।
১৬. নিরপেক্ষ প্রশাসনের উক্ত লিখিত নিরাপত্তার জন্য অনুমতিপত্র বাহাছ অনুষ্ঠিত হওয়ার ১৫ দিন পূর্বেই প্রতিপক্ষকে তার ১ কপি জমা দিতে হবে।
১৭. নিরপেক্ষ প্রশাসনের উক্ত লিখিত নিরাপত্তার জন্য অনুমতিপত্র সঠিক কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষে গ্রহণযোগ্য হবে।
১৮. উক্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের জন্য লিখিত অনুমতিপত্র তদন্তে সঠিক হলে বাহাছ অনুষ্ঠিত হবে।
১৯. উভয় পক্ষের বক্তব্য রেকর্ড করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২০. উভয়পক্ষের তরফ হতে বাহাছের সমস্ত খরচ বহন করা হবে। তবে যারা পরাজিত হবে তারা বিজয়ীদের সমস্ত খরচ পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে।
২১. বাহাছের বিষয়সমূহের প্রত্যেকটির ব্যাপারে বাহাছের ১৫ দিন পূর্বেই প্রত্যেকেই তার বিপরীত পক্ষের কাছে দলীলভিত্তিক লিখিত সিদ্ধান্ত বা ফায়সালা পেশ করতে হবে এবং যারা বাহাছে অংশগ্রহণ করবে তারা স্বয়ং নিজ হাতে তাতে নাম ও ঠিকানাসহ স্বাক্ষর করবে।
২২. বাহাছের মজলিসে প্রথমেই উভয় পক্ষ বাহাছের পূর্বলিখিত আলোচনার বিষয়সমূহ হুবহু জনসম্মুখে পাঠ করে শুনাবেন। অতঃপর উক্ত পঠিত কপি পূর্বের লিখিত কপির সঙ্গে গরমিল আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য নিজ নিজ কপি অপর পক্ষের নিকট জমা দিবেন।
২৩. চুক্তিনামায় উল্লিখিত বিষয়সমূহের বাইরে কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে না।
২৪. যদি চুক্তিনামায় স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিবর্গের কেউ বাহাছে রাজী না হয়, বরং তাদের প্রতিনিধি পাঠায় তবে তাদেরকে এই মর্মে লিখিত দিতে হবে যে, ‘আমাদের প্রতিনিধি বাহাছে পরাস্ত হলে আমরাও বাহাছে পরাস্ত হলাম’।
২৫. চুক্তিনামায় আবদ্ধ হওয়ার পর যথাসময়ে যদি কোন পক্ষ উপস্থিত না হয় অথবা কোন বাহানা দেখিয়ে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে অনুপস্থিত পক্ষই পরাজিত বলে পরিগণিত হবে এবং বাহাছের যাবতীয় খরচ বহন করতে বাধ্য থাকবে।
২৬. যদি কোন কারণে বাহাছের নির্ধারিত তারিখ কোন পক্ষ পরিবর্তন করতে চায়, তবে কমপক্ষে এক মাস পূর্বে বিপরীত পক্ষকে জানাতে হবে।
২৭. বাহাছে যারা পরাস্ত হবে তারা বিজয়ীপক্ষের নিকট ভুল স্বীকার করে তওবা করবে ও জনসম্মুখে প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা দিয়ে সমস্ত কিছু মেনে নিতে বাধ্য থাকবে।
২৮. বাহাছকারী উভয় পক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা জামানত হিসেবে প্রত্যেক পক্ষের মূল আলোচকের নিকট অবশ্যই জমা রাখতে হবে। যে পক্ষ বাহাছে পরাজিত হবে তার জমাকৃত টাকা বিজয়ী পক্ষ আনুষাঙ্গিক খরচ হিসেবে পাবেন।
২৯. বাহাছের চূড়ান্ত শর্তসমূহ উভয়পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে ১৫০/- (একশত পঞ্চাশ টাকার) ট্যাম্পে লিখিতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
৩০. উভয়পক্ষ নিজস্ব সিলসিলার কোন কিতাব থেকে দলীল দিতে পারবে না, তার পূর্ববর্তী ও নির্ভরযোগ্য কিতাব হতে দলীল দিতে হবে।
৩১. যে পক্ষ দলীল বেশি পেশ করতে পারবে, সেই পক্ষের ফতওয়াই গ্রহণযোগ্য হবে এবং বিজয়ী হিসেবে গণ্য হবে।
৩২. বাহাছের কোন তৃতীয় পক্ষ থাকবে না।
৩৩. যে লিখিত বিষয়ের বাইরে আলোচনা করবে, সে আলোচনার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।

No comments:

Post a Comment